স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরোজগঞ্জে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনিত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেলের হাতে হাত রেখে বিএনপি, সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মোট ১০৫ জন জামায়াতের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগদান করেন। এসময় নবাগত সদস্যদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন এবং জামায়াতের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানানো হয়। গতকাল রবিবার বিকেল ৫টায় শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের ভূমি অফিসের সামনের মাঠে এ যোগদান সভা অনুষ্ঠিত হয়। যোগদানকারী সদস্যদের মধ্যে বেশিরভাগই বিএনপির রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট।
জানা গেছে, সরোজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী ও বিএনপির ত্যাগী নেতা সাজেদুল ইসলাম সাজুর নেতৃত্বে বোয়ালিয়া গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রভাত অধিকারী, শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি বেল্টু রহমান, নবীননগর গ্রামের বিএনপি নেতা বিপুল, একই গ্রামের কাঙ্গাল, সরোজগঞ্জ বাজারের বিএনপি নেতা ওলীউর রহমান ওলীসহ ১০৫ জন জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দান করেন।
অ্যাডভোকেট রাসেল ভাইয়ের ব্যবহার আমাকে মুগ্ধ করেছে উল্লেখ করে সাবেক বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী সাজেদুল ইসলাম সাজু বলেন, আমি ২৪ বছর বিএনপি করেছি। কিন্তু এখন বিএনপির নেতারা কর্মীদের খোঁজখবর রাখেন না। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের ব্যবহার ও নীতি আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। তাই আজ আমরা সকলে সত্য ও সুন্দর দলে যোগ দিয়েছি।”
বেল্টু রহমান বলেন, আমি ২৯ বছর বিএনপিতে ছিলাম। কিন্তু এখন দলটি চাঁদাবাজি ও মাদকের সঙ্গে জড়িত। জামায়াতে ইসলামই একমাত্র দল যারা বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত ও ন্যায়নিষ্ঠ রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারে। অ্যাডভোকেট রাসেল ভাইয়ের ব্যবহার আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি বিশ্বাস করি, দেশ জামায়াতের হাতেই নিরাপদ।
সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রভাত অধিকারী বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নীতি-আদর্শ আমার কাছে ভালো লেগেছে। তাই আজ রাসেল ভাইয়ের হাতে হাত রেখে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিলাম।
সরোজগঞ্জ বাজার ইউনিট সভাপতি মাসুম বিল্লাহ হাওলাদারের সভাপতিত্বে ও সদর থানা প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ মামুন হাওলাদারের উপস্থাপনায় প্রধান অতিথি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল বলেন, আজ যারা জামায়াতে যোগ দিয়েছেন, আমরা তাদের পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ। আমরা চাই বৈষম্যমুক্ত, মাদকমুক্ত এবং ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে। আপনাদের সহযোগিতা থাকলে ইনশাআল্লাহ জনগণ জাতীয় নির্বাচনে সত্য ও ন্যায়ের প্রতীক জামায়াতকেই বেছে নেবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিট সদস্য মো: আব্দুর রউফ, সদর উপজেলা আমীর বেলাল হোসাইন, যুব বিভাগের জেলা সেক্রেটারি মো: আরিফুল ইসলাম, উপজেলা সেক্রেটারি গোলাম রসুল, সহকারী সেক্রেটারি সাজিবুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা অফিস সম্পাদক হাফেজ মাসুম বিল্লাহ, জেলা এইচআরডি সম্পাদক মো: আবু রায়হান, ইউনিয়ন আমীর-সেক্রেটারিসহ বিভিন্ন দায়িত্বশীল ও কর্মীবৃন্দ।
এদিকে সোমবার রাত ৮টায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের নূরনগর মুন্না মোড়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন- সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল।
সভায় দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে তিনি বলেন, বিভাজনের রাজনীতি আমরা চাই না। আমরা চাই ঐক্যের, ন্যায়ের ও উন্নয়নের রাজনীতি। জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে, একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার মাধ্যমেই দেশকে সত্যিকার অর্থে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা একটি ছোট পৌরসভা হলেও এখানে উন্নয়নের সম্ভাবনা অনেক। যদি সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়, দুর্নীতি বন্ধ হয়, তবে এই পৌরসভাকে মডেল পৌরসভায় পরিণত করা সম্ভব। আমরা জনগণের পাশে থেকে উন্নয়নের রাজনীতি করতে চাই, বিভাজনের নয়।
সভায় বক্তারা বলেন, জামায়াতে ইসলামী সবসময় ন্যায়, ইনসাফ ও মানবিক মূল্যবোধের রাজনীতি করে আসছে। দাঁড়িপাল্লা প্রতীক জনগণের ন্যায়ভিত্তিক পরিবর্তনের প্রতীক, যা একটি শৃঙ্খলাপূর্ণ, মাদকমুক্ত ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের অর্থ সম্পাদক মো: কামাল উদ্দিন, চুয়াডাঙ্গা পৌর আমীর অ্যাডভোকেট হাসিবুল ইসলাম, পৌর সেক্রেটারি মোঃ মোস্তফা কামাল, নায়েবে আমীর মাহবুব আসিক শফি, ইসলামী ছাত্রশিবির জেলা অফিস সম্পাদক হাফেজ মাসুম বিল্লাহ, এইচআরডি সম্পাদক মো: আবু রায়হান, পৌর কর্মপরিষদ সদস্য শরীফুজ্জামান শরীফ, পৌর যুব বিভাগের সেক্রেটারি মো: শাহ আলমসহ স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা পৌর ৭নং ওয়ার্ড সভাপতি হাফেজ আব্দুস সালাম।