স্টাফ রিপোর্টার
দামুড়হুদা উপজেলার গোবিন্দহুদা গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে জয়নুর রহমান (৫২) নামের এক কৃষককে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরো ৩ জনকে মারাত্নকভাবে জখম করা হয়েছে। আহতদের অবস্থা আংশকাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার গোবিন্দহুদা গ্রামে এ ঘটনা। নিহত জয়নুর রহমান গোবিন্দহুদা গ্রামের মণ্ডলপাড়ার মৃত. ঝড়ু মন্ডলের ছেলে। আহত তিনজন হলেন, মৃত. ঝড়ু মন্ডলের দুই ছেলে খাজা মণ্ডল (৫৬), জাহির (৪৫) ও খাজা মণ্ডলের ছেলে দিপু (১৮)। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে রাতেই গোবিন্দহুদা কবরস্থানে নিহতের নামাজের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, নূরুল হক পেশকার গ্রুপ ও মাসুদ বিল্লাহ মন্টু গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ দুই গ্রুপের মধ্যে মাঝে মধ্যে সংঘর্ষের ঘটেছে। তারই জের ধরে গতকাল সকাল সাড়ে আটটার দিকে নুরুল পেশকার তার লোকজন নিয়ে মন্টু গ্রুপের জয়নুরদের উপর দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। এ সময় জয়নুর, দিপু, জাহির ও খাজা আলাদা আলাদা স্থানে কাজ করছিলেন। তারা ধারালো অস্ত্র নিয়ে জয়নুরসহ চারজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় রক্তাক্ত অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। বেলা পৌনে ১২টার দিকে জয়নুর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
নিহত জয়নুরের ভাতিজা খোকন বলেন, দীর্ঘদিন যাবত জয়নুর চাচাদের সাথে নুরুল পেশকারের জমি নিয়ে বিবাদ ছিল। আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে নুরুল পেশকার তার লোকজন নিয়ে বলিপুতার মাঠে হাজির হয়। সেখানে জয়নুল, দিপু, জাহির এবং খাজা আলাদা আলাদা স্থানে অবস্থান করছিল। তখন গোবিন্দহুদা গ্রামের নুরুল হক ও তার ছেলে আবির, একই গ্রামের নজির, আলী হোসেন, আবুল হোসেন, রুহুল, ইয়ান, রহমান, তারিকসহ আরো কয়েকজনজন ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মাঠে কর্মরত জয়নুরদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। সেখানে তারা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিল। পরে আমরা তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে জয়নুর চাচা মারা যায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শাপলা খাতুন বলেন, আমি ডিউটিরত থাকা অবস্থায় ৪জন গুরুতর জখম নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে আসে। তাদের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজন ছিল। তাদেরকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা শেষে ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যু হয়। আর ২ জনের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।
দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবীর বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে চারজনকে কুপিয়ে জখম করার খবর পেয়েছি। এরমধ্যে জয়নুরের মৃত্যু হয়েছে। আমরা অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে এবং আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।