চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বিএনপি নেতা মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু

স্টাফ রিপোর্টার

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও  জনপ্রিয় সাবেক ছাত্র নেতা মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জান্নাতুল মওলা কবরস্থানে মায়ের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন তিনি। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে হাজারো মানুষের ভালোবাসা ও অশ্রুভেজা শ্রদ্ধায় তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তাকে জান্নাতুল মাওলা কবরস্থানে দাফন করা হয়।

সকাল ১০টায় লাশবাহী গাড়িটি চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে এসে পৌঁছায়। এরআগে থেকে জেলার চার উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ ও দলীয় নেতা কর্মিরা শিপলুকে শেষ বারের মত দেখার জন্য টাউন মাঠে ভীড় জমায়। নামাজে জানাজার পূর্বে টাউন অধিকাংশস্থান কানাই কানাই ভরে যায়। জানাজার পূর্বে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও এর অংগসংগঠনসমুহের এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে মরহুমের কফিনে পুস্পমাল্য অর্পন করা হয়। পরে জেলা জাসাসের সাধারন সেলিমুল হাবিব সেলিমের সঞ্চালনায় মরহুম শিপলুর কর্মময় জীবন নিয়ে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক এমপি শামসুজ্জামান দুদু, জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু, জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ, শিপলুর মেজো ভাই নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম বিপুল। এ সময় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রত্যেকেই আবেগতাড়িত হয়ে পড়ে।

বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমাদের ছোট ভাই ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধা শিপলু। আমাদের জানাজা যার পড়ার কথা আজ তার জানাজা আমরা পড়ছি। শিপলু ছাত্র রাজনীতিতে বেশ সক্রিয় ছিলেন। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন। শিপলুর সাথে আমার বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে তিনি ছিলেন একজন ত্যাগী নেতা। বিএনপির রাজনীতিকে কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সবসময় এই ভাবনাই তার মধ্যে ছিল। বিএনপিকে সাফল্যের চূড়ায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। আমরা তার বিদ্রোহী আত্মার শান্তি কামনা করি। মহান আল্লাহ তায়ালা যেন তাকে জান্নাতবাসী করেন। আমিন।

জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, তিনি ছিলেন ত্যাগী, নির্লোভ ও ভদ্র একজন রাজনীতিক। এমন নেতৃত্ব হারানো শুধু দলের নয়, পুরো জেলার জন্য এক গভীর ক্ষতি। জীবিত এবং মৃত মানুষের মধ্যে এটাই পার্থক্য যে, জীবিত মানুষ নিজের জন্য দোয়া করতে পারেন কিন্তু মৃত মানুষ নিজের জন্য দোয়া করতে পারেন না। তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন, আমরা সকলেই তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং তার জন্য দোয়া করি যাতে মহান আল্লাহ তা’আলা তাকে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করেন।

তার জানাযায় জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, তার এই অকাল মৃত্যুর শোক ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। আমাদের সকলকে কাঁদিয়ে এভাবে চলে যাবে কখনো ভাবিনি। মারা যাবার আগের রাতেও তার সাথে আমার ৫ মিনিট ৩৮ সেকেন্ড কথা হয়েছে। আমাকে বলেছিল মেডিকেল টেস্ট শেষ করেই আমি চুয়াডাঙ্গায় চলে আসব। সে ফিরল ঠিকই কিন্তু লাশ হয়ে। আসার সিরিয়াল আছে কিন্তু যাওয়ার কোন সিরিয়াল নেই। আমাদের সকলকেই একদিন না একদিন চলে যেতে হবে। তার মৃত্যুতে আমরা এই শিক্ষায় গ্রহণ করি, আমরা যাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি এবং ঈমানদার হয়ে মরতে পারি। পরে বাইতুল মামুর জামে মসজিদের খতিব মওলানা জাহিদুর রহমান জানাজার নামাজের ঈমামতি করেন।

চুয়াডাঙ্গা শহরের কোর্টপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হকের বড় ছেলে মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু ছিলেন ছাত্রদল থেকে উঠে আসা নেতৃত্বের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যান মির্জা শিপলু। শনিবার রাতে তিনি ধানমণ্ডিতে ভাইয়ের বাসায় একাই ছিলেন। রবিবার সকালে ফোনে যোগাযোগ না পেয়ে ছোট ভাই মির্জা রাতুল বাসায় গিয়ে দরজা ভেঙে প্রবেশ করলে তাঁর নিথর দেহ দেখতে পান।

 রবিবার আছরের পর ঢাকার মোহাম্মদপুরের আল মারকাজুল ইসলাম আল মাদানি মসজিদের সামনে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম জানাজা। এরপর মধ্য রাতে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছায়।

রাজনীতির পাশাপাশি মির্জা শিপলু ছিলেন সমাজসেবায় নিবেদিত এক মানবিক মানুষ। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, দুই ভাইসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর অকাল প্রয়াণে পুরো চুয়াডাঙ্গাবাসী শোকাভিভূত। তার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নিরব শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, যা সহজে পূরণ হওয়ার নয়।

জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলুর জানাজায় অংশ নেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু, সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক অ্যাড. কামরুল হাসান,  জেলা জামায়াতের আমীর রুহুল আমিন, সহ-সেক্রেটারী অ্যাড. মাসুদ পারভেজ রাসেল, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক অ্যাড ওয়াহিদুজ্জামান বুলা, খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সফিকুল ইসলাম পিটু, খালিদ মাহমুদ মিল্টন, দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা আবুল হাসনাত, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম নজু, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান খোকন, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিন্টু, জীবনগর পৌর বিএনপির সভাপতি শাহজাহান কবীর, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির  সিনিয়র সহ-সভাপতি আখতার হোসেন জোয়ার্দার, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি রাফিতুল্লাহ মহলদার, জীবনগর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এম,আর মুকুল, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, দর্শনা থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আখতার হোসেন, জীবননগর পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম তাজু, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি খন্দকার কাজী সাচ্চু, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রোকন, জীবনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপটন, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু, দর্শনা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ আলী, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক পল্টু, জীবননগর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান ডাবলু, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, সাধারন সসম্পাদক সাবু তরফদার, জেলা যুবদলের সভাপতি শরীফুজ্জামান সিজার, সিনিয়র সহ-সভাপতি আশরাফুল হক মিল্টু, সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশীদ ঝন্টু, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও চিতলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল ছালাম বিপ্লব, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদ মোহাম্মদ রাজিব খান, জেলা কৃষক দলের আহবায়ক মোকাররম হোসেন, সদস্য সচিব ও বাড়াদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোবারক হোসেন, জেলা মৎসজিবি দলের আহবায়ক কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শরিফুল আলম বিলাস, সাধারণ সম্পাদক এম,এ,তালহা, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হাসান টুটুল, জেলা জাসাস এর সভাপতি সহিদুল হক বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহজাহান খান, জেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক মওলানা আনোয়ার হোসেন, সদস্য সচিব হাফেজ মাহবুব আলম মাহবুব, জেলা আইনজীবী ফোরাম এর আহবায়ক অ্যাড. আ স ম আব্দুর রউফ, সদস্য সচিব অ্যাড. মামজারুল আলম জোয়ার্দার হেলাল, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহবায়ক মনজুর লার্জ, সদস্য সচিব সুমন পারভেজ খান, প্রবীন আইনজীবী অ্যাড. সেলিম উদ্দিন খান, অ্যাড. শাহজাহান মুকুল, চুয়াডাঙ্গা জেলা জজকোর্ট এর পিপি অ্যাড. মারুফ সারোয়ার বাবু প্রমুখ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *