দর্শনা অফিস
দর্শনা কেরুর ডিস্টিলারি থেকে ১৩ হাজার লিটার ডি এস স্প্রিরিট গায়েব হওয়ার ঘটনায় ৪ জন বন্ডেড ওয়্যারহাউজ ইনচার্জকে অভিযুক্ত করে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। ১৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরন ধার্য করে ৪ জনকে দেশের বিভিন্ন মিলে শাস্তিস্বরুপ বদলি করা হয়েছে। সরকারি মালামাল আত্নসাত করে পার পাওয়া যায়না। এটাই বর্তমান কেরু কতৃপক্ষ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রমান করায় মিল এলাকায় বেশ আলোচনা সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছ
কেরু চিনিকল সুত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৬ জুন ২০২৪ তারিখ ডিস্টিলারির ডি এস গোডাউন হাউজ থেকে ১৩ হাজার লিটার ডি এস স্প্রিট গায়েব হওয়ার খবর জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে ফলাও করে প্রকাশ হয়। অভিযুক্তদের বাঁচাতে কেউ কেউ ইদুর বিড়াল খেলা শুরু করেন। কোন কথায় বা রক্ত চক্ষুর ভয় না করে চিনিকল কতৃপক্ষ দ্রুতই ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি সহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও চিনি করপোরেশন সহ মোট ৩ টি কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু করে। তদন্ত কমিটিকে প্রভাবিত করতে একটি মহল দৌড়ঝাঁপ শুরু করে। সব কিছু উপেক্ষা করে তদন্ত কমিটি সঠিকভাবে রিপোর্ট করে। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখ বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন চেয়ারম্যান বরাবর রিপোর্টটি দাখিল করেন। রিপোর্টে বন্ডেড ওয়্যারহাউজে পর্যায়ক্রমে যারা দায়িত্ব পালন করেছে সেই ৪ জনকে সনাক্ত করে ১৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা সঠিক মেয়াদ পর্যন্ত অর্থদন্ড করার নির্দেশনা দেয়া হয়। সে মোতাবেক ডিস্টিলারির বন্ডেড ওয়্যারহাউজের ইনচার্জ হিসেবে পর্যায়ক্রমে ৪ জন ব্যক্তি দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে আলমগীর হোসেনকে ২৮ হাজার ৪১৯ টাকা ৮০ পয়সা, দেলোয়ার হোসেনকে ১ লাখ ২৭ হাজার ৮৮৯ টাকা ৩০ পয়সা, হারুন অর রশিদকে ৩ লাখ ১২ হাজার ৬১৮ টাকা ৩০ পয়সা ও এ কে এম সাজেদুর রহমানকে ৯ লাখ ৬৬ হাজার ২৮৫ টাকা। মোট ১৪ লাখ ২০ হাজার ৯৯২ টাকা ৪০ পয়সা স্প্রিরিটের মুল্য পরিশোধ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। সাথে সাথে অভিযুক্ত ৪ জনকেই শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঠাকুরগাঁও চিনিকলে, নর্থবেঙ্গল চিনিকলে, জয়পুরহাট চিনিকলে বদলি করা হয়। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন থেকে এই ৪ জনের অর্থদন্ড ও দেশের অন্যমিলে বদলির খবর আসার সাথে সাথে এলাকাবাসিরা বলতে থাকেন, অভিযুক্তরা কেরুর উৎপাদিত ডি এস স্প্রিরিট আত্মসাৎ করে সেই টাকা ফেরত দিল। কিন্ত আত্মসাৎ করার অপরাধে তাদের কেরু মিল থেকে অন্যমিলে বদলি করায় কি শাস্তি ?? তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করে জেলে পাঠালে মিলের অন্যান্য শ্রমিক কর্মচারিরা এ থেকে শিক্ষা গ্রহন করতো। এতে মিলে অপরাধ প্রবনতা কমে আসতো বলে ভুক্তভোগীরা মনে করেন।
এ বিষয়ে কেরু চিনিকলের ব্যাবস্থপনা পরিচালক জনাব রাব্বিক হাসান (এফ সি এম এ) মঙলবার দুপুরে জানান, প্রত্যেকটা তদন্ত রিপোর্টে এই ৪ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়ার পর কর্পোরেশনের মাননীয় চেয়ারম্যান মহদ্বয়ের কাছে রিপোর্ট দাখিল করেন। সে মোতাবেক যে সময় পর্যন্ত ৪ জন দায়িত্ব পালন করেছেন সে সময় পর্যন্ত ক্ষতিপুরন ধার্য করার বিধান রাখা হয়। তাদের ৪ জনকে অন্যমিলে বদলি করা হয়েছে।
দর্শনা কেরু ডিস্টিলারির ১৩ হাজার লিটার স্প্রিরিট গায়েব হওয়ার ঘটনায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন ৪ জনকে অভিযুক্ত করে অর্থদণ্ড, শাস্তি স্বরুপ অন্য মিলে বদলি!
