স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গার আলুকদিয়ায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় পাখিভ্যান চালক রমজান আলী (২৮) ও পাখিভ্যান যাত্রী পারভীনা খাতুন (৪৫) এর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো দুইজন। গতকাল রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া বাজারে প্রধান সড়কের উপর এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত পারভীনা খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের মনিরামপুর কাছারি পাড়ার মৃত রাজু আহমেদের স্ত্রী। নিহত পাখিভ্যান চালক রমজান আলী একই গ্রামের ফজম আলীর ছেলে।
আহতরা হলেন, নিহত পারভীনার পুত্রবধূ আনিকা খাতুন (১৮) ও রাজাপুর গ্রামের ইসরাত জাহান (২৬)। এ সময় উৎসুক জনতার ভীড়ে সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যহত হয়।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা শহর থেকে কিছু মালামাল কিনে নিজগ্রাম মনিরামপুরে পাখিভ্যানযোগে ফিরছিলেন পারভীনা। তারা আলুকদিয়া বাজারে পৌঁছালে পিছন থেকে আসা মেহেরপুর গামী একটি যাত্রীবাহী বাস ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়। যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে যায় পাখি ভ্যানটি। ঘটনাস্থলেই নিহত হন পারভীনা খাতুন এবং আহত হন চালকসহ দুইজন। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা বাসটি উল্টিয়ে বাসের নিচ থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে পথিমধ্যে পাখিভ্যান চালক রমজান আলীর মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চুয়াডাঙ্গা শহর থেকে একটি পাখিভ্যান তিনজন যাত্রী নিয়ে আলুকদিয়ার দিকে যাচ্ছিল। পথে আলুকদিয়া বাজারের কাছাকাছি পৌঁছালে চুয়াডাঙ্গা থেকে ছেড়ে আসা মেহেরপুরগামী একটি যাত্রীবাহী বাস পিছন দিক থেকে ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান পারভীনা খাতুন। ভ্যানচালক রমজানসহ অন্যরা গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে তাদের চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় রমজানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। তবে পরিবারের সদস্যরা রমজানকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পথে চুয়াডাঙ্গা সদরের নয়মাইল এলাকায় তার শারীরিক অবস্থা আরও গুরুতর হলে স্বজনেরা আবারো সদর হাসপাতালের দিকে ফেরত আনেন। পরে জরুরি বিভাগে চিকিৎসক পরিক্ষা করে বিকেল ৪টার দিকে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
এদিকে, দুর্ঘটনার পরপরই বাসচালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় বাসটি উল্টিয়ে বাসের নিচ থেকে পারভীনার মরদেহ উদ্ধার করে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় উৎসুক জনতা রাস্তায় দুধারে ভীড় করেন। কিছু সময়ের জন্য সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আফরিনা ইসলাম বলেন, মোট চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। পারভীনা খাতুনকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। রমজানকে ফেরত আনার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি আহত দুজনকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) খালেদুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গার আলোকদিয়ায় বাসের ধাক্কায় পাখিভ্যানে থাকা দুইজন নিহত হয়েছেন। বাসটি জব্দ করা হয়েছে। তবে বাসের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছেন। নিহতের ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।



