স্টাফ রিপোর্টার
এক নতুন উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ১৭ নভেম্বর সোমবার চুয়াডাঙ্গা জেলার নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে মোহাম্মদ কামাল হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। একই দিনে তিনি জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবেও অতিরিক্ত দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
জানা যায়, গত ৯ নভেম্বর রবিবার মোহাম্মদ কামাল হোসেনকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে গত সোমবার বিকালে আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। নতুন জেলা প্রশাসকের যোগদানকে কেন্দ্র করে জেলাজুড়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়। জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে এক আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে জেলার বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিবর্গ তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা ও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। দায়িত্ব গ্রহণের পর এক সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় মোহাম্মদ কামাল হোসেন চুয়াডাঙ্গা জেলার সার্বিক উন্নয়ন, জনসেবার মানোন্নয়ন, এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং সরকারের লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়নে তিনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এই মহতী উদ্যোগে তিনি জেলার সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সুশীল সমাজ এবং সর্বস্তরের জনগণের আন্তরিক সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন। জেলা প্রশাসক তাঁর নতুন কার্যক্রমের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গার জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে জেলাবাসী আশাবাদী।
প্রজাতন্ত্রের এই চৌকস কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামাল হোসেনের বাড়ি কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার সুবিল ইউনিয়নের ছায়া সুনিবিড় সুবিল গ্রামে।
বাবা হারুন-অর রশীদ ও মা মনোয়ারা বেগমের ৩ ছেলে-মেয়ের মধ্যে কামাল হোসেন সবার বড়। ১৯৯৩ সালে এসএসসি, ১৯৯৫ সালে এইচ এসসি, ১৯৯৯ সালে গ্রাজুয়েশন ও ২০০১ সালে কৃতিত্বের সহিত মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
মোহাম্মদ কামাল হোসেন ২৭তম বিসিএস’র মাধ্যমে সুনামগঞ্জ ডিসি অফিসে সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করে চাকুরী জীবন শুরু করেন। এরপর সিলেট জেলার বালাগঞ্জ ও বিশ্বনাথ উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি, পরবর্তীতে সিলেট কালেক্টরেটে এনডিসি ও আরডিসি হিসেবেও কৃতিত্বের সহিত দায়িত্ব পালন করেন। এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে রাঙ্গামাটি সদর ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় কর্মরত ছিলেন। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা থেকে পদোন্নতি পেয়ে নোয়াখালী জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) ও চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক( এডিসি) হিসেবে যোগদান করেন। পরে পদোন্নতি পেয়ে উপ-সচিব হিসবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন। পরবর্তীতে বান্দরবন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ঢাকার মহাখালী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হিসেবে পদায়িত হন। সর্বশেষ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ইকোনমিক্স রিলেশন ডিভিশন (ইআরডি)তে যোগদান করেন। প্রজাতন্ত্রের এই কর্মকর্তা ১৭ বছর প্রশাসনের বিভিন্ন পদে সুনামের সহিত চাকরি করে চলতি মাসের ১৭ নভেম্বর সোমবার অপরাহ্নে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করেন ।
নবাগত জেলা প্রশাসককে শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বি.এম তারিক উজ জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নয়ন কুমার রাজবংশী, সহকারি কমিশনার (ভুমি) এস.এম. আশিস মোমতাজ, সহকারী কমিশনার আলাউদ্দিন আল আজাদ, সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল নাঈম, সহকারী কমিশনার আসফাকুর রহমান, এছাড়াও চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও জেলার সকল সরকারি দপ্তরসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। এছাড়াও, বেসরকারি সংস্থা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বস্তরের সাধারণ জনগণ। এসময় নতুন জেলা প্রশাসককে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়।



