স্টাফ রিপোর্টার
আগামী ৫ ও ৬ আগস্ট বিএনপির স্বৈরাচারবিরোধী বিজয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির প্রস্ততি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনার। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গত ১৬ বছর ধারে আওয়ামী স্বৈরাচারী সরকারের হাতে এই দেশের গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, ন্যায়বিচার সব কিছু বন্দি ছিল। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দিয়ে তারা দেশের মানুষকে বন্দি বানিয়েছিল। সেই সব সময়ে সারাদেশ যখন স্তব্ধ, নিরুত্তাপ, তখন চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শহিদ জিয়ার আদর্শে অনুপ্রাণিত আমাদের নেতাকর্মীরা বুক চিতিয়ে রাজপথে ছিলেন। মামলা, হামলা, নির্যাতন, খুন, গুমÑকিছুই তাদের দমিয়ে রাখতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের টানা আন্দোলন-সংগ্রাম এবং জনগণের অন্তরাত্মার আকাক্সক্ষা মিলেই একদিন বদলে দেয় দৃশ্যপট। গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার পতিত হয় এবং শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। তাই ৫ আগস্ট দিনটি আমাদের জাতীয় জীবনে এক নতুন সূচনা। এবারের ৫ আগস্ট সেই গৌরবময় ঘটনার প্রথম বার্ষিকী, যে দিন আমরা গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মুক্তির প্রত্যয়ে নতুন যাত্রা শুরু করেছিলাম।
তিনি জানান, দিনটিকে স্মরণ করতে আগামী মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) জেলার প্রতিটি উপজেলা ও থানা পর্যায়ে ছাত্র ও জনতার উদ্যোগে বিজয় র্যালি বের করা হবে। র্যালিগুলো এলাকার প্রধান সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করবে। পরদিন বুধবার (৬ আগস্ট) বিকাল ৪টায় চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে জেলা বিএনপির আয়োজনে বিজয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে জেলার সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করবেন। সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করবে।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে শরীফুজ্জামান শরীফ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বর্তমান পরিস্তিতিতে আমাদের সবার আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। জনগণ আমাদের দিকে চেয়ে আছে। কেউ যেন দলের নাম ভাঙিয়ে নিজের স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা না করে, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। পদ-পদবি নয়, আমাদের প্রধান লক্ষ্য জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা। জাতীয় নির্বাচন সামনে, এটি আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। এখন ঘরে বসে থাকার সময় নয়। সকল ভেদাভেদ ভুলে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ জেগে উঠেছে, স্বৈরাচারের পতন ঘটেছে। এবার সামনে তাকাতে হবে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। এই সংগ্রামে বিএনপি প্রস্ত নেতৃত্ব দিতে। জনগণের পাশে থাকলে জয় নিশ্চিত।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্তিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু এবং সফিকুল ইসলাম পিটু। সভায় জেলা বিএনপির অপর সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ মিল্টনের সঞ্চালনায় এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম নজু, জীবননগর পৌর বিএনপির সভাপতি শাহজাহান কবীর, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আখতার হোসেন জোয়ার্দার, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রোকন, দর্শনা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপটন।
আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক পল্টু, জীবননগর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান ডাবলু, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মন্টু মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রফেসর আবুল হাসেম, জেলা মহিলা দলের সভাপতি রউফ উর নহর রিনা, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশীদ ঝন্টু, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, জেলা স্বে”ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এম.এ তালহা, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক জুয়েল মাহমুদ।
সভায় জানানো হয়, ৫ ও ৬ আগস্টের কর্মসূচি বাস্তবায়নে জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষের সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু এবং সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ।