জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ আসিফের স্মরণে নর্দান ইউনিভার্সিটিতে আলোচনা সভা।

ঢকা প্রিতিনিধি:

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শহীদ আসিফ হাসান স্মরণে নর্দান ইউনিভার্সিটিতে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৮ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে ‘শহীদ আসিফ ও রক্তাক্ত জুলাই : প্রতিবাদের প্রতিচ্ছবি’ শীর্ষক আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। আসিফ নর্দান ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
অনুষ্ঠানে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় আপনারা দেখেছেন লাশ গুম করেছে। তারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। কিন্তু তাদের বিচারের জন্য আমাদের এক বছর কেন অপেক্ষা করতে হবে। এই বিচার বিলম্বিত হওয়া একদিনও উচিত নয়। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার অনেক বেশি সময় নিচ্ছে।
তারা বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা যথাযথ মনে করি না।’
নতুন স্বৈরাচার তৈরি হলে জুলাই পরাজিত হবে বলে মন্তব্য তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে আমাদের শেখার অনেক কিছু আছে। আপনারা যেটাকে ‘জুলাই সনদ’ বলছেন, সেটি আমরা রক্ত দিয়ে লিখেছি। এখন সেটার স্বীকৃতি আদায় করে নিতে হবে।
যদি সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত না হয়, যদি স্বৈরাচার আবার ফিরে আসে অথবা নতুন কোনো স্বৈরাচার তৈরি হয়, তাহলে জুলাই পরাজিত হবে।
সলিমুল্লাহ খান বলেন, জাতিসংঘের হিসেবে শুধু জুলাই গণ-অভ্যুত্থানেই প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন ১ হাজার ৪০০ জন। এর আগের ১৫ বছরে কত প্রাণ গেছে, কত মানুষ গুম হয়েছে? স্বাধীনতার পর থেকে কত প্রাণ গেছে— তাও হিসেব নিতে হবে, বিচার করতে হবে। আমাদের এ দাবি জানাতে হবে।

নর্দান ইউনিভার্সিটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, আজকের ঘটনার সাক্ষী হওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য নর্দান ইউনিভার্সিটিকে ধন্যবাদ। যারা এই অভ্যুত্থানে প্রাণ দিয়েছে, অবদান রেখেছে— প্রত্যেকের স্বীকৃতি চাই। এটা ইতিহাস ও সত্যের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার। যে লক্ষ্যে আমরা ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন করেছিলাম, সেই লক্ষ্য পূরণে ২০২৪ সালে আমরা সম্ভাবনা তৈরি করেছি। মানুষ যেন তার সম্পূর্ণ মানবিক মর্যাদা ফিরে পায়— সেজন্য আমাদের কাজ করে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে শহীদ আসিফ হাসানের বাবা মাহমুদ আলমের পক্ষে বক্তব্য দেন আসিফের ভাই রাকিব হাসান। তিনি শহীদ আসিফকে স্মরণ করায় পরিবারের পক্ষ থেকে নর্দান ইউনিভার্সিটিকে ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্বীকৃতি এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের দাবি জানান।
নর্দান ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্দান ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ সদস্য লাবিবা আব্দুল্লাহ এবং শিক্ষাবিদ ড. মীর মনজুর মাহমুদ।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক উপদেষ্টা ড. মিজানুর রহমান ও রেজিস্ট্রার কমান্ডার মো. মোস্তফা শহীদ (অব.) বিএন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *