স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গায় ধানবীজ উৎপাদনে খরচ হচ্ছে প্রতি কেজিতে ৫৩ টাকা। অথচ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) বোরো ধানবীজের মূল্য নির্ধারণ করেছে মাত্র ৪৮ থেকে ৪৯ টাকা। এতে প্রতি কেজিতে কৃষকদের লোকসান হচ্ছে প্রায় ৫-৬ টাকা। এই লোকসানের প্রতিবাদে বীজ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন চুক্তিবদ্ধ কৃষকরা। ফলে মুখ থুবড়ে পড়েছে ধানবীজ সংগ্রহ কার্যক্রম।
চলতি বোরো মৌসুমে চুয়াডাঙ্গা জেলায় বিএডিসি মোট ৭,৬৮০ মেট্রিক টন ধানবীজ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে কন্ট্রাক্ট গ্রোয়ার্স প্রোগ্রাম থেকে ৩,৬০৫ মেট্রিক টন, অধিক বীজ কর্মসূচি থেকে ২,৪৯৫ মেট্রিক টন এবং আপৎকালীন মজুদ কর্মসূচি থেকে ১,৫৮০ মেট্রিক টন বীজ সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে চুক্তিবদ্ধ কৃষকরা সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় তিনটি বীজ সংগ্রহ অফিসে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। ১০ দিন ধরে বন্ধ থাকা অফিসগুলো এখন তালাবদ্ধ, আর প্রায় শতাধিক শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।
কৃষকরা জানান, ধানবীজ উৎপাদনে প্রসেসিং, আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ, ধুলাবালি ও চিটা বাদ দেওয়াসহ বিভিন্ন খাতে খরচ হয়। ১ মণ ধান থেকে গড়ে ৩২ কেজি বীজ তৈরি হয় এবং প্রতিকেজি ধানবীজ প্রস্তুতে খরচ হয় ২ টাকার বেশি। এতে এক কেজি বীজ উৎপাদনে মোট খরচ দাঁড়ায় ৫৩ টাকা।
চুক্তিবদ্ধ কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, “বছরের পর বছর লোকসান গুনছি। এবারও প্রতি কেজিতে ৪-৫ টাকা লোকসান দিতে হবে বলে আমরা বীজ সরবরাহ বন্ধ রেখেছি। যতদিন পর্যন্ত ৩-৪ টাকা মূল্য না বাড়ানো হবে, ততদিন এক বস্তা ধানও বিএডিসিতে দেব না।”
বিএডিসির নির্ধারিত দামে বীজ সরবরাহ বন্ধ থাকায় জেলার তিনটি প্রক্রিয়াজতকরণ কেন্দ্র অচল হয়ে পড়েছে। এতে দেশের অন্যান্য জেলায় নির্ভরশীল কৃষকরাও বীজ সংকটে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা বীজ প্রক্রিয়াজতকরণ কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালক এএফএম শফিকুল ইসলাম বলেন, “দাম নির্ধারণের পর থেকে কৃষকরা বীজ সরবরাহ বন্ধ রেখেছেন। আমাদের হাতে কোনো সিদ্ধান্ত নেই। কৃষকরা লিখিতভাবে জানালে বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।” তিনি আরও বলেন, “পরি¯ি’তি স্বাভাবিক রাখতে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করি, শিগগিরই সমস্যা সমাধান হবে।”