জয়রামপুর রেলস্টেশনে সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস-কপোতাক্ষ ট্রেনের যাত্রা বিরতিসহ ৪ দফা দাবীতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি

স্টাফ রিপোর্টার
দামুড়হুদা জয়রামপুর রেল স্টেশনে সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ ট্রেনের আপ ডাউন স্টপেজের দাবীতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৫ টার দিকে এই মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত
দামুড়হুদা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর রেল স্টেশনে সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ ট্রেনের আপ ডাউন স্টোপেজের দাবিতে স্থানীয়রা পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচীতে অংশ নেওয়ার জন্য বৃষ্টিতে ভিজে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে মানববন্ধন করেছে। তারা সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ ট্রেন স্টপেজের দাবিতে শত শত মানুষ প্লাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে জয়রামপুর রেল স্টেশনে অবস্থান নেয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমাদের জয়রামপুর রেল স্টেশন জেলার একটি পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী রেল স্টেশন। রাজশাহী মেডিকেলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যাতায়াতের জন্য এই স্টেশনে যেনো সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ আপ ডাউন ট্রেন থামানো হয়। এখানে স্টপেজের দাবীতে আমরা আজ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। এই লাইনে প্রথম গেদে থেকে জগতী স্টেশন পর্যন্ত রেল যোগাযোগ চালু হয়। তখন থেকেই এই জয়রামপুর স্টেশন চালু ছিলো। কিন্তু বর্তমানে এই স্টেশন টি প্রায় বন্ধ হবার উপক্রমে আছে, বলতে গেলে এখন জয়রামপুর স্টেশন বন্ধ আছে। আমাদের দাবী এই স্টেশনটি অতি তাড়াতাড়ি যাতে চালু হয় আমরা জনগণ সেই দাবী জানিয়েছি। তবে আমাদের ৪ দফা দাবির মধ্যে ১. রেল স্টেশনে গেট ম্যান দিতে হবে, ২. স্টেশন মাস্টার দিতে হবে, ৩. রেল স্টেশনটি সংস্কার করতে হবে, ৪. রাজশাহীগামি সাগর দাঁড়ি এক্সপ্রেস ও কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপেজ দিতে হবে। এ সময় জয়রামপুর স্টেশন প্রাঙ্গনে আমাদের দাবি, আমাদের দাবি, স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে।
এদিকে সাবেক সেনা সদস্য লাজিব আক্তার সিদ্দিকী বলেন, ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর রেল স্টেশনে আগে স্টেশন মাস্টার ছিল, স্টাফদের থাকার জায়গা ছিল, গেটম্যান ছিল। এখন এখানে আর কিছুই নাই স্টেশনটি বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা চাই স্টেশনটি আবার নতুন করে চালু করা হোক। সাগরদাড়ি ও কপোতাক্ষ ট্রেনের আপ এবং ডাউন স্টপেজ দাবী করছি।
জয়রামপুর মানবকল্যান যুব সংগঠন এর সভাপতি মনিরুল ইসলাম মিলন বলেন, ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর রেল স্টেশনে গেট ম্যান না থাকার কারণে বেশ কয়েকটি তাজা প্রাণ-অকালে ঝরে গেছে। এই স্টেশনটিতে স্টেশন মাস্টারসহ কোন লোকজন নেই। কিন্তু এক সময় এই ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর রেল স্টেশনে ৪৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিল। কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে গেছে। শুরু থেকেয় গেদে থেকে কুষ্টিয়া জগতী রেললাইন চালু হয়। তখন থেকেই জয়রামপুর রেল স্টেশন জমজমাট ছিল। এই অঞ্চলে প্রায় দুই লাখের অধিক মানুষ এই জয়রামপুর স্টেশন ব্যবহার করতো। এখানে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর গুড়েরহাট যেখান থেকে সারা বাংলাদেশে ট্রেনের মাধ্যমে খেজুরের গুড় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হতো
এদিকে কপোতাক্ষ ট্রেনটি বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে জয়রামপুর রেল স্টেশনে ঢুকলে রেল লাইন অবরোধের কারনে চালক ট্রেনটি থামিয়ে দেয়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থান নেয়। এ সময় ১৫/২০ মিনিট ট্রেনটি স্টেশনে দাঁড়িয়েছিল। ট্রেনের গার্ড আশ্বস্ত করলেন আপনাদের ৪ দফা দাবির বিষয়ে আমরা উদ্ধতন কর্মকর্তাদের জানাবো। তারা হয়ত কিছু দাবি পুরন করবে। একপর্যায়ে এক মাসের মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করার প্রতিশ্রুতি দিলে আন্দোলনকারীরা অবরোধ তুলে নেন। এদিকে, রেলপথে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রেলওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশসহ পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
এসময় মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পিয়ার মাহমুদ, আবু হানিফ, হুমায়ুন কবির ডাবলু , মাদ্রাসা শিক্ষক নাফিস আখতার সিদ্দিকীসহ এলাকাবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।
চুয়াডাঙ্গা স্টেশন মাষ্টার মিজানুর রহমান বলেন, ১৫/২০ মিনিট কপোতাক্ষ ট্রেনটি অবরোধের কারনে জয়রামপুর স্টেশনে আটকা ছিলো। তারপর থেকে এ রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *