জীবননগর অফিস
কয়েকদিন তীব্র তাপদহের পর কয়েক দফা স্বস্তির বৃষ্টিতে চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। বৃষ্টিপাত হলেও কমছে না তাপমাত্রা। মঙ্গলবার (২০ মে) বিকাল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৬ডিগ্রি সেলসিয়াস। জৈষ্ঠ্যমাসের প্রখর রোদে ক্লান্ত জনজীবনে প্রশান্তি এনে দিচ্ছে রসালো মৌসুমি ফল তালের শাঁস। ভ্যাপসা গরমের কারনে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে কদর বেড়েছে তালের শাঁসের।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার, বাসস্ট্যান্ড, চৌরাস্তা সহ জনবহুল এলাকায় রাস্তার পাশে দেখা যাচ্ছে তালের শাঁস বিক্রির ভ্রাম্যমাণ দোকান। দোকানদার ধারালো দা দিয়ে তাল কেটে শাঁস বের করে দিচ্ছেন। ক্লান্ত পথচারীরা সেখানে দাড়িয়েই তালের শাঁস কিনে খাচ্ছেন। কেউ বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের জন্য। মাঝেমাঝে বিক্রির চাপ এতোটাই বেড়ে যাচ্ছে যে তালের শাঁস পেতে ক্রেতাদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
উপজেলার উথলী বাসস্ট্যান্ডে তালের শাঁস বিক্রেতা মন্টু মিয়া জানায়, প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে ১ থেকে দেড়শ তাল পাইকারি দরে কিনে নিয়ে আসি। একটি তালের সাধারণত ৩ টি করে শাঁস পাওয়া যায় প্রতিটি শাঁস ৬/৭ টাকা করে বিক্রি করে থাকি। তালের আকার অনুপাতে একহালি তালের শাঁস ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। ভ্যাপসা গরমের কারনে তালের শাঁসের চাহিদা বেড়ে গেছে। এখন আমাদের কচি তাল পাওয়া কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আগের মত তাল এখন আর পাওয়া যায় না।
তালের শাঁস কিনতে আসা আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রচন্ড রোদে শরীর খুব ক্লান্ত হয়ে গেছে। এখান থেকে ৪ টা তালের শাঁস খেয়ে মনে হচ্ছে কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেয়েছি।
পথচারী সজিব হোসেন বলেন, তীব্র গরমে রাস্তায় চলাচল করে শরীর নাজেহাল অবস্থা হয়ে গেছে।রাস্তার পাশে তালের শাঁস বিক্রি হচ্ছে দেখে দাড়িয়ে কয়েকটি তালের শাঁস কিনে খেলাম। কচি তালের শাঁস খেয়ে পথের ক্লান্তি অনেকটা দুর হয়ে গেছে।
ভ্যান চালক শামসুল ইসলাম বলেন, প্রচন্ড রোদের মধ্যে রাস্তায় যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করতে তৃষ্ণা অনুভব করছিলাম। ডাবের দাম বেশি থাকায় ডাব কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই তাই ২৫ টাকার তালের শাঁস কিনে খাচ্ছি।
তালের শাঁস বিক্রেতা আলী হোসেন জানায়, প্রচন্ড তাপহদের কারনে হঠাৎ করে তালের শাঁসের চাহিদা বেড়ে গেছে। এলাকায় তাল গাছ কমে যাওয়ার কারনে কচি তাল খুঁজে পাওয়া কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সারাদিন বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে যে তাল গুলো পাচ্ছি সেগুলোই বিক্রি করছি।
নানা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ তালের শাঁসের রয়েছে অনেক উপকারিতা। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ আছে। এটি খেলে মানবদের পানির চাহিদা পূরণ করে। তালের শাঁস একটি আশযুক্ত খাবার। এ শাঁস খেলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কম থাকে। অপরিষ্কার তালের শাঁস খেলে আবার ডায়েরিয়ারও ঝুঁকি থাকে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।