পবিত্র ঈদ উল আযহা উদ্যাপন উপলক্ষে প্রস্ততিমূলক সভা অনুষ্ঠিত
স্টাফ রিপোর্টার
পবিত্র ঈদ উল আযহা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার বেলা ১২টায় জেলা প্রশাসকের সন্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মিজানুর রহমান গত বছর অনুষ্ঠিত ঈদ উল আযহার সভার কার্যবিবরণী পাঠ করে শোনান। গত বছরের আলোকে এ বছর ঈদ উল আযহার নামাজ, পশুর বর্জ্য, কোরবানীর পশু হাট বসানোর উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। পশু হাটে দালালের দৌঁড়াত্ম হ্রাস , জাল টাকা সনাক্ত বিষয়টি উঠে আসে। এছাড়াও পশু হাটের মধ্যে হাটা চলা করা যায় সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হাট মালিকদের নির্দেশনা দেয়া হয়। সেই সাথে প্রত্যেকটি পশু হাটে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দেয়া হয়। হাটের দিন প্রধান সড়কের উপর গরু বা গরুর গাড়ি দাড় করিয়ে রাস্তা বন্ধ করা চলবে না বলে জানানো হয়।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক জহিরুল ইসলাম বলেন, অনেক সময় পশু শেয়ার নিয়ে আমরা বিবাদে জড়িয়ে পড়ি। সেই দিকটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। সবাইকে আল্লাহ তালা ধৈর্ষ ধারণ করার তৈফিক দিক। কোরবানী যে একটি ত্যাগ, আমাদেরকে সেই বুঝ দিক আল্লাহ তালা। সেই মহান উদ্দেশ্যে নিয়ে আমরা যেন কোরবানী সঠিকভাবে পালন করতে পারি।
সভায় পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, কোরবানীর পশু কিনতে গিয়ে ক্রেতারা যাতে প্রতারিত না হয়, সেই দিকটা আমরা খেয়াল করব। হাটে দালালের দৌঁড়াত্ম বন্ধে আমরা সবাই মিলে ব্যবস্থা নিবো। হাটে দালাল থাকবে, তবে সেটা যাতে ক্রাইমের পর্যায়ে না যায়। ঈদে একটি লম্বা ছুটি থাকবে। এ সময়ে প্রতিটি মার্কেটের নাইট গার্ডের পাশাপাশি পুলিশ সতর্ক থাকবে।
প্রস্তুতিমূলক সভায় আরো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ঈদের জামাত ঈদগাঁও মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। একই মাঠে বা মসজিদে যেখানে একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হবে সেখানে প্রথম জামাত থেকে দ্বিতীয় জামাতের সময়ের ব্যবধান হবে ৩০ মিনিট। এবার ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে চাঁদমারী মাঠে সকাল সাড়ে ৭টায়, এছাড়াও পৌর ঈদগাঁও মাঠে সকাল সাড়ে ৭টায়, মডেল মসজিদ, সদর মডেল মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। বিরুপ আবহাওয়া হলে নিকটস্থ মসজিদে ঈদের নামাজ আয়োজন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়াও কোরবানীর পশুর বর্জ যেখানে সেখানে ফেলা যাবে না। পৌরসভার নিদিষ্টস্থানে রেখে দিতে হবে। অথবা বাড়ির আঙ্গিনায় পুতে ফেলতে হবে।
সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে সকল পশুহাটে পশুর সুস্থতা যাচাই করতে হবে। সকল পশুহাটে কুরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়ে হাসিলের হার নির্ধারণ করা হয়। সরকার নির্ধারিত হাসিলের বাইরে কোন হাট মালিক গরু-ছাগলের খাজনা বেশি নিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নির্দিষ্ট স্থানে কুরবানির পশু জবাই নিশ্চিত করার জন্য সকল পৌরসভা/উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ হতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ এবং দ্রুততম সময়ে বর্জ্য অপসারণ করার কথা বলা হয়। সংশ্লিষ্ট ঈদগাহ মসজিদ কমিটি আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঈদ জামাতের সময় নির্ধারণ/পরিবর্তন করতে পারবে। ঈদের জামাত যথাসম্ভব বড় করা এবং ক্ষুদ্র জামাতগুলোকে একসাথে করে বড় জামাতে পরিণত করার। জেলার কর্মসূচির সাথে মিল রেখে স্ব-স্ব উপজেলার কর্মসূচি গ্রহণসহ ঈদের জামাতের সময়সূচি নির্ধারণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণকে অনুরোধ জানানো হয়। কারাবন্দীরা যেন কারাগারের অভ্যন্তরে জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেল সুপারকে অনুরোধ করা হয়।
পবিত্র ঈদ-উল-আযহার নামাজের স্থানগুলোসহ শহরের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করার জন্য পুলিশ সুপারকে অনুরোধ জানানো হয়। ঈদের আগের রাতে ও ঈদের ছুটিতে বিনোদনের নামে নাচ-গান, মাইকিং, উচ্ছৃঙ্খলতা, পটকা, আতসবাজি, রাস্তায় বিশৃঙ্খলভাবে মটর সাইকেল চালানো, গেট নির্মাণ করে টাকা বা চাঁদা আদায় বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
প্রস্তুতিমূলক সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, সিভিল সার্জন হাদি জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ, জীবননগর নির্বাহী অফিসার মো. আল-আমীন, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তিথি মিত্র, কৃত্রিম প্রজননের উপ পরিচালক ডা. শামিমুজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার, জেলা দোকান মালিক সমিতির আহবায়ক মনজুরুল আলম মালিক লার্জ, সদস্য সচিব সুমন পারভেজ, চেম্বার অব কমার্সের মর্তুজা, সাতগাড়ী বাইতুশ^র জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোনা মিয়া, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, সাংবাদিক মফিজ জোয়ার্দ্দার, আহসান আলম, আলমগীর হোসেন রনিসহ সরকারি সকল দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।