মেহেরপুর প্রতিনিধি
লাঠি খেলা, ঢোল আর লাঠির তালে তালে নাচা নাচি। অন্য দিকে প্রতিপক্ষের হাত থেকে আত্মরক্ষার কৌশল অবলম্বনের প্রচেষ্টা। সেই সাথে টান টান উত্তেজনা। ঐতিহ্যবাহী এই খেলাটি এখনো গ্রামীণ সংস্কৃতির একটি অংশ ও বেশ জনপ্রিয়। আবহমানকাল ধরে বিনোদনের খোরাক যোগাচ্ছে এ লাঠি খেলা। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে গতকাল সোমবার সকালে এমনি এ লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত হল মেহেরপুরের গাংনীর ফুটবল মাঠে। গাংনী পৌর বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মেঘলার সভাপত্বিতে ‘গাংনী বাজার পাড়া উন্নয়ন সংস্থা’ আয়োজিত এ খেলার উদ্বোধন করেন মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন।
এ লাঠি খেলায় ৪ টি দল অংশ নেয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মাঠে নামেন লাঠিয়ালরা। তারা কখনও ঢোল আর কাঁশরের তালে তালে নেচে নেচে তাদের কসরত দেখান, আবার কখনও প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চালান লাঠি ও সড়কি। প্রতিপক্ষ লাঠিয়াল সেই আঘাত ঠেকিয়ে প্রতিঘাত করতে সদা প্রস্তুত বেতের তৈরী ঢাল আর লাঠি নিয়ে। আবার কেউ কেউ লাঠিয়ে ঘুরিয়ে দর্শকদের আকৃষ্ট করেন।
কাজিপুর লাঠিয়াল বাহিনীর সর্দার আনিছুর রহমান জানান, আগের কালে ছিল জমিদারী প্রথা। সেকালে ছিল না এত আগ্নেয়াস্ত্রের ঝনঝনানি। বিভিন্ন সময়ে জমিদারদের মধ্যে বিভিন্ন বিভেদ গায়ের জোরে মিমাংসা করা হত। এক্ষেত্রে যার যত লাঠিয়াল ছিল তার ততো বিজয়ী হবার সম্ভাবনা ছিল। আগের কালের জমিদার, জোতদাররা বংশ পরম্পরায় লাঠিয়াল পুষত। লাঠি দিয়ে আত্মরক্ষার কৌশল শেখাতেন লাঠিয়াল ওস্তাদেরা। গাংনী পৌর লাঠিয়াল বাহিনীর লাঠিয়াল হাবিবুর জানান, এক সময় চোর ডাকাত আর প্রতিপক্ষের হামলা থেকে রক্ষা পেতে লাঠিখেলার কৌশল গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। তাছাড়া দর্শকদের আনন্দেরও খোরাক এ খেলার কলা কৌশল ও শারীরিক কসরত। তবে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের অংশ গ্রহণ বেশ ইতিবাচক বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন জানান, লাঠিখেলা শুধু আত্মরক্ষার কৌশলই নয়, এটি গ্রামীণ সাংস্কৃতির একটি অংশ। চিত্ত বিনোদনের পাশাপাশি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ ধরনের আয়োজন অব্যহত রাখা হবে।



