খন্দকার শাহ আলম মন্টু
বর্তমানে নারীরা কোনো কাজেই পিছিয়ে নেই। তারা তাদের নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। ঘরে বাইরে সব পেশায় নিজেদের নিয়োজিত করছে। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা। বলছি নারী উদ্যোক্তা হোসনেয়ারা গোলাপীর কথা। বাবা ছিলেন একজন মাদ্রাসার শিক্ষক। পঁচ বোন এবং তিন ভাইয়ের মধ্যে গোলাপী ছিলেন সবার ছোট। ক্লাস নাইনে পড়া অবস্থায় গোলাপির বিয়ে হয় আলমডাঙ্গা মাদ্রাসা পাড়ার একজন প্রতিবন্ধী কামরুজ্জামান এর সাথে। শশুর যত দিন বেঁচে ছিলেন গোলাপি কে সংসারের চিন্তা করা লাগেনি। শশুর মারা যাওয়ার পরে গোলাপির মাথার উপরে আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। শেষ ছায়াটুকু তার হারিয়ে যায়। পরিবারের অন্যান্যদের কাছে সে নির্যাতনের শিকার হয়। দুই মেয়ে এক ছেলে স্বামী এবং নিজে, পাঁচজনের সংসারে তার টানাটানি পড়ে যায়। অভাবের তাড়নায় সে দিশেহারা হয়ে পড়ে। প্রতিবন্ধী স্বামী ইনকাম করতে পারেনা গোলাপি পড়ে যায় বিপদে। এমন অবস্থায় গোলাপির খালা শাশুড়ি গোলাপিকে একটা সেলাই মেশিন দান করেন। ঘুরে যায় গোলাপির ভাগ্যের চাকা। সেলাইয়ের কাজ করে টুকটাক সে সংসার চালাতে থাকে। পাড়া-প্রতিবেশীরা তাকে কাজ দিতে থাকে। একপর্যায়ে সে আলমডাঙ্গা বাজারের ভিতরে টেলার্সের কাজের জন্য দোকান ভাড়া নেয়। সেই থেকে নতুনকরে শুরু হয় তার পথ চলা তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সংসারের হালধরে সে। সন্তানদেরকেও লেখাপড়া শিখিয়ে সুশিক্ষায় মানুষ করে সে। বর্তমানে তার ছোট মেয়েটা একটা সরকারি চাকরি করে। টেলার্স এর পাশাপাশি সে খাবার নিয়েও কাজ শুরু করেছে। বিভিন্ন ধরনের পিঠা, রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী কালাই রুটি, ঝাল মুড়ি সবকিছু পাওয়া যায় তার প্রতিষ্ঠানে। বর্তমানে তার দুইটা প্রতিষ্ঠান রোজ ফ্যাশন পার্ক এবং রোজ ফুড পার্ক। আলমডাঙ্গা মাছ বাজার সংলগ্ন রিয়াদ কমপ্লেক্সের সামনে মকবুল সুপার মার্কেট এ তার প্রতিষ্ঠান দুইটি অবস্থিত। আজ সে নিজেই শুধু স্বাবলম্বী নয়, আরো পাঁচ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে সে নিজের প্রতিষ্ঠানে। সে আজ একজন সফল নারী উদ্যোক্তা।