স্টাফ রিপোর্টার
দামুড়হুদা উপজেলার ভগিরথপুরের বাসিন্দা বাংলাদেশের প্রথম মালটা ও কমলা চাষী সাখাওয়াত হোসেন বাবুল আর নেই। বিশিষ্ট কমলা ও মাল্টা চাষী সাখাওয়াত হোসেন গতকাল সোমবার সকাল ৭টার দিকে ঢাকার পিজি হাসপাতােেলর আই সি ইউ তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে মরহুমের বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর।
ভগিরথপুর গ্রামের আব্দুর রহিম মাস্টারের পুত্র সাখাওয়াত হোসেন দামুড়হুদা এলাকায় ৪০ বিঘা জমিতে মাল্টা, আফ্রিকান কমলা ও ড্রাগন চাষ করে সারা বাংলাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। ২০১২ সালের দিকে ব্যতিক্রমী ফল চার্জ পদ্ধতির উদ্যোক্তা হিসাবে কাজ শুরু করেন। এর কিছুদিন পর থেকেই মালটা কমলা ও ড্রাগন ফলের চাষের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সাখাওয়াতের নাম। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে উৎসুক জনতা এ বাগান দেখতে আসার পাশাপাশি বাগান থেকে মাল্টা, কমলা ও ড্রাগন ফলের চারা নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় গড়ে তোলেন ফল বাগান । ফল মানবখ্যাত সাখাওয়াত হোসেনের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গার দামুহুদায় বিদেশি ফল চাষের দারুন সম্ভবনা তৈরি হওয়ায় এ এলাকায় গড়ে ওঠে একাধিক মালটা, কমলা ও ড্রাগন বাগান। বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি ফল চাষের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন কারী উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি একাধিক স্থানীয় পর্যায়ে জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার লাভ করেন। জাতীয় পর্যায়ে উজ্জ্বল করেন চুয়াডাঙ্গার মুখ। ভগিরথপুরে গ্রামের বাড়ি হলেও ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন চুয়াডাঙ্গা গুলশন পাড়ার। কুষ্টিয়ার পাকশী পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে চাকুরীরত অবস্থায় তিনি এলাকায় গড়ে তোলেন ব্যতিক্রমী চাষের ফল চাষের বাগান।
মরহুমের ভাইরা ভাই গোকুলখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয় হামিদুল ইসলাম জানান, সেপ্টেম্বর মাসের ১০ তারিখে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে সাখাওয়াত হোসেন ভর্তি হন ঢাকার বারডেম হাসপাতালে। সেখানে স্বাস্থ্যের অবনতি হলে ইবনে সিনা সহ ঢাকার বেশ কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। অবস্থার বেশি অবনতি হলে তাকে নেওয়া হয় ঢাকার পিজি হাসপাতালের আইসিইউতে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার সকাল ৭:১০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফল মানব নামে পরিচিত সাখাওয়াত হোসেন। গতকাল সোমবার বিকেলে মরহুমের মরদেহ দামুড়হুদা ভগিরথপুরে পৌঁছালে নিকট আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব ও এলাকার মানুষের কান্না আর আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। গতকাল বাদ এশা নামাজে জানাজা শেষে গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।