চুয়াডাঙ্গায় মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার

চুয়াডাঙ্গায় মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  গতকাল রবিবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা আইন-শৃঙ্খলা ও অন্যান্য কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। শুরুতে সেপ্টেম্বর মাসের সভার কার্যবিবরণী পাঠ করেন জেলা প্রশাসনের সহকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আলাউদ্দিন আল আজাদ।
এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, মোবাইল কোর্ট হচ্ছে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। শুধু আইন প্রয়োগ করলেই অপরাধ দমন সম্ভব নয়, এজন্য সচেতনতাও জরুরি। তিনি জানান, বিভিন্ন শ্রেণির অপরাধ দমনে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে এবং একই সঙ্গে জনসচেতনতা বাড়াতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মসজিদ ও মাদ্রাসাগুলোতে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইসলামী ফাউন্ডেশন জেলার ১২৩০টি মসজিদে এই কার্যক্রম চালু করেছে। এছাড়া, বিআরটিএ’র মাধ্যমে চালকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বাড়ানো হচ্ছে।
সভায় জেলা প্রশাসক এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠুভাবে ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবারের পূজা নির্বিঘ্নে উদযাপিত হয়েছে। পূজা উদযাপন কমিটির তৎপরতা ও আন্তরিকতা প্রশংসনীয়। সভায় শহরের যানজট ও ফুটপাত দখল ইস্যুতে বিস্তর আলোচনা হয়।
উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, শহরে অটোরিকশার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে, যা পথচারীদের জন্য বড় ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় চাষিরা পর্যাপ্ত সার না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। অনেক সময় সার বিতরণ কেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে বলে সভায় জানানো হয়। এ সমস্যা সমাধানে উপজেলা প্রশাসন, কৃষি বিভাগ ও সংশ্লিষ্টদের যৌথভাবে তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক। পৌরসভার প্রধান সড়কের দুই পাশে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা চালানোর বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
জানা যায়, অনেক ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী প্রতিদিন ভাড়া দিয়ে অবৈধভাবে দোকান বসাচ্ছেন। এসময় বক্তারা বলেন, সড়কের ওপর ব্যবসা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে দুর্ঘটনা ও যানজট উভয়ই বাড়ছে। সভায় আরও জানানো হয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে পুরাতন জেলখানার স্থানে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত জায়গাটি অবৈধভাবে দখল হয়ে গেছে। সেখানে গড়ে উঠেছে হোটেল, চায়ের দোকান ও পুরোনো কাপড়ের ব্যবসা। দ্রুত এসব উচ্ছেদের দাবি ওঠে।
চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন কুমার রাজবংশীর সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোস্তাফিজুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম সাইফুল্লাহ, আলমডাঙ্গা ইউএনও মেহেদী ইসলাম, দামুড়হুদা ইউএনও তিথি মিত্র, জীবননগর ইউএনও আল আমীন, আনসার ও ভিডিপি জেলা কমান্ড্যান্ট ফারুক ইসলাম, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রেজাউল করিম, জেলা শিক্ষা অফিসার জেসমিন আরা খাতুন, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি প্রফেসর মো. কামরুজ্জামান, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. শামীমা ইয়াসমিন, সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ সুজাত কাজী, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বেলাল হোসেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ডা. মার্টিন হিরক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হেমন্ত কুমার সিংহ রায়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *