স্টাফ রিপোর্টার
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘোষিত আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের ওপর গণভোট আয়োজনসহ ৫–দফা দাবিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল রবিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসকের হাতে এ স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন। একই দাবিতে সারাদেশের বিভাগীয় শহর ও জেলাগুলোতেও একযোগে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের হাতে স্মারকলিপি হস্তান্তরের পর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সেক্রেটারি মাওলানা জুবায়ের খান গণমাধ্যমকে বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা আজ প্রধান উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে হস্তান্তর করেছি।
আমাদের পাঁচ দফা দাবির মূল বিষয়গুলো অন্যান্য ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এক হলেও, পঞ্চম দফায় কিছু পার্থক্য রয়েছে। অন্যান্য দল পুরো জাতীয় সংসদে অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (চজ) পদ্ধতি চায়, কিন্তু বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কেবল সংসদের উচ্চকক্ষে এ পদ্ধতি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও, জুলাই জাতীয় সনদকে আইনগত ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে এখনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সংগঠনটি মনে করে, সনদটির আইনি স্বীকৃতি ছাড়া অভ্যুত্থানের অর্জন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস প্রস্তাব করেছে– প্রথমত, জুলাই জাতীয় সনদের জন্য সংবিধান আদেশ জারি করা; দ্বিতীয়ত, নির্বাচনের পূর্বে গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়ন করা।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, বিগত সরকার স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী আচরণের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর রাজনীতিকরণ করেছে এবং জনগণের ভোটাধিকারকে বিপন্ন করেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়।
সংগঠনটির উপস্থাপিত ৫–দফা দাবিসমূহ হলো– ১. জুলাই সনদের অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন। ২. জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ। ৩. আগামী নির্বাচনে প্রকৃত লেভেল–প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করা। ৪. জুলাই গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করা। ৫. জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর (চজ) পদ্ধতি বাস্তবায়ন।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে বলা হয়, উল্লিখিত দাবিগুলো বাস্তবায়িত হলে জনগণের আস্থা পুণরুদ্ধার হবে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরবে এবং ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। স্মারকলিপি হস্তান্তরের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি মুফতী শোয়াইব আহমাদ কাসেমী, সহ–সভাপতি হাফেজ আশরাফ, সহ–সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তারিক মাহমুদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মাওলানা মারুফ হাসান, জেলা শাখার সদস্য মাওলানা মূসা নুর, সদর থানা শাখার সেক্রেটারি মুফতী আহমাদ যুবায়ের, জেলা যুব মজলিসের সভাপতি আব্দুল হাইসহ মাওলানা মুতাসিম বিল্লাহ ও মাওলানা ফয়জুল্লাহ আল মুনির প্রমুখ।