গাংনীতে শিক্ষক জোবায়ের বিরুদ্ধে এতিম শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ

মেহেরপুর অফিস

মেহেরপুরের গাংনীতে কবুতর চুরির অভিযোগে এতিম এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে মাদ্রাসার শিক্ষক। ঘটনাটি ঘটেছে গাংনী উপজেলার ফজলুল উলুম কওমি মাদ্রাসায়। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক রয়েছে।

জানা গেছে, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ফজলুল উলুম কওমি মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীকে ‘কবুতর চুরির’ অভিযোগে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে মাদ্রাসার এক শিক্ষক। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে। আহত শিক্ষার্থীর নাম জুনায়েদ হোসেন (১৩)। সে কুষ্টিয়ার জেলার দৌলতপুর উপজেলার মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে।

আহত শিশু জুনায়েদ হোসেনের মা রিমা খাতুন জানান, প্রায় দুই মাস আগে জুনায়েদ তার দুই বন্ধুকে নিয়ে দুটি কবুতর বাড়িতে যায়। আমি কবুতর দুটি জবাই করে রান্না করি এবং ওদের খাওয়াই। পরে শুনেছি মাদ্রাসার পাশের কারও কবুতর হারিয়েছে। আমি মালিকের সঙ্গে দেখা করে কবুতরের দাম দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তারা বলেছিল আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। অথচ গতরাতে জানতে পারি, আমার ছেলেকে শিক্ষক জোবায়ের হোসেন নির্মমভাবে পিটিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, শিক্ষক জোবায়ের হোসেন সামান্য জুনায়েদ ছোট মানুষ তাকে অপরাধের বিষয়ে বুঝিয়ে বললেই হয়তো আর এমন অপরাধ করতো না। কিন্তু এমন নির্মমভাবে পেটানো ঠিক হয়নি। অথবা তার অভিভাবককে জানানো উচিত ছিল। কিন্তু এমন এতিম শিশুর ওপর এই ধরনের নির্যাতন অমানবিক। তারা অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেন।

ফজলুল উলুম কওমি মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মুফতি সাইদুর রহমান জানান, ঘটনার পরপরই শিক্ষক জোবায়ের হোসেনকে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এমন শিক্ষককে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাখলে শুধু বদনাম হবে। তবে পলাতক থাকায় অভিযুক্ত শিক্ষক জোবায়ের হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। গাংনী উপজেলা শিশু সুরক্ষা কর্মী আবু হাসান শাহরিয়ার প্রান্ত বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে আমরা ঘটনাটির সত্যতা পেয়েছি। এবং আমার উর্ধতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। শিশুটির সমস্ত চিকিৎসা খরচসহ এ সংশ্লিষ্ট সমস্ত কিছু সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে বহন করা হবে।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহ-আল-আজিজ বলেন, শিশু জুনায়েদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার হোসেন জানান, আমি খবর পেয়ে উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের শিশু সুরক্ষা কর্মী আবু হাসান শাহরিয়ার প্রান্তকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিলো। পরবতীর্তে আমি এই প্রতিষ্ঠানের ওঢ়ধা শিক্ষকের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *