স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গা একাডেমির সহকারী প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুনের বিদায় সংর্বধণা দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দু-দফা বিদায় দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পক্ষ থেকে প্রত্যাহিক সমাবেশে দাঁড়িয়ে স্মৃতিচারণ মূলক বক্তব্য ও চুয়াডাঙ্গা একাডেমীর লেখাপড়ার উন্নয়নে সেলিনা খাতুনের যে ভূমিকা ছিল সেই ভূমিকা তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা স্মৃতি স্মরণ করেন। এ সময় অশ্রু সিক্ত নয়নে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে চুয়াডাঙ্গা একাডেমির সহকারি প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুনকে ফুলের শুভেচ্ছা ও উপঢৌকন দেওয়া হয়।
এরপর দুপুরে বিদ্যালয়ের সভাকক্ষে আবেগঘন পরিবেশে চুয়াডাঙ্গা একাডেমির গভর্নিং বডির সভাপতি ও শিক্ষকদের পক্ষ থেকে সেলিনা খাতুনকে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। চুয়াডাঙ্গা একাডেমির প্রধান শিক্ষক সুকেশ কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথীর বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা একাডেমীর গভর্নিং বডির সভাপতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান সাদিদ। তিনি বলেন, বিদায়ী প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুন ছিলেন একজন আদর্শ শিক্ষিকা। যিনি শিক্ষার্থীদের মায়ের আদর-স্নেহ দিয়ে লেখাপড়ায় উৎসাহিত করেছেন। এমন একটি সময় ছিল, যে সময় চুয়াডাঙ্গা একাডেমির লেখাপড়ার মান ও পরিবেশ অনেকটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। সেই ধ্বংস থেকে টেনে তুলে চুয়াডাঙ্গা শহরের কয়েকটি নামকরা স্কুলের কাছাকাছি চুয়াডাঙ্গা একাডেমীর নাম টেনে এনেছিলেন। আমি ব্যক্তিগতভাবেও সহকারি প্রধান শিক্ষিকার ভক্ত ছিলাম। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হাবিবুর রহমান সাদিদ চুয়াডাঙ্গা একাডেমীর উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে আরো বলেন, আমি আমার শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও চুয়াডাঙ্গা একাডেমির লেখাপড়ার মান ও সার্বিক পরিবেশ রক্ষা করে চুয়াডাঙ্গার বুকে একটি আদর্শ বিদ্যালয় হিসেবে চুয়াডাঙ্গা একাডেমীকে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। ইতিমধ্যেই চুয়াডাঙ্গা একাডেমীর সাইকেল স্ট্যান্ড ও অ্যাসেম্বলি গ্রাউন্ডে মাটি ভরাট বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা কার্যকরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা একাডেমীর সকল উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। তাই এই বিদায় দিনে সহকারী প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুনকে আমি অনুরোধ করে বলতে চাই আপনি বিদায় নিলেও এ প্রতিষ্ঠানের যেকোনো প্রয়োজনে আমরা আপনার শরণাপন্ন হতে পারি। সেদিন নিশ্চয় আপনি আমাদের পাশে থাকবেন।
বিদায় সংবর্ধনার আলোচনা শেষে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সেলিনা খাতুন কে ফুলেল শুভেচ্ছা, বই উপহার, ক্রেস্ট প্রদান সহ অন্যান্য উপহার সামগ্রী তুলে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য- চুয়াডাঙ্গার আলুকদিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ৭ জানুয়ারি ১৯৮৩ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এক সময় তিনি অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ওই রোমেলা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়েই পড়া-লেখা করেছিলেন। ২০০২ সালের ৩১শে আগস্ট আলুকদিয়া রোমেলা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের পদ ছেড়ে দেন। সহকারী প্রধান হিসাবে চুয়াডাঙ্গার একাডেমিতে যোগদান করেন ২০০২ সালের ১লা সেপ্টেম্বর। গতকাল ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে চুয়াডাঙ্গা একাডেমীর সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ থেকে কর্মজীবন শেষ করেন।