দামুড়হুদার ডুগডুগিতে জমজমাট জুয়ার আসর সর্বশান্ত হচ্ছে অনেক পরিবার, বিপথগামী হচ্ছে যুবসমাজ

স্টাফ রিপোটার

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারো দামুড়হুদার ডুগডুগি মাঠে বসানো হচ্ছে জমজমাট জুয়ার আসর। এবার আটঘাট বেঁধে দায়িত্ব নিয়েছেন জুয়া চক্রের বহু পুরাতন হোতা খোকন, খালেক ও চাঁদআলী। এ আসরে প্রতিদিন মিলিত হচ্ছে জেলার চিহ্নিত জুয়াড়ীরা। প্রচুর টাকা হার-জিতের এ নেশায় সর্বশান্ত হচ্ছে বহু পরিবার। বাড়ছে অপরাধ মুলক কর্মকান্ডসহ পারিবারিক কলহ। এ দিকে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছেন জুয়া চক্রের মুলহোতারা।

জানা গেছে, প্রায় দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে চলে আসছে আওয়ামী লীগের দোসরদের নেতৃত্বে দামুড়হুদার ডুগডুগি জুয়ার আসর। আর এ জুয়ার আসর পরিচালনায় রয়েছে স্থানীয় একটি জুয়া চক্র। তারা হলেন, দামুড়হুদার হাউলী ইউনিয়নের ডুগডুগি হাটপাড়ার খালেক, চাঁদ আলী, অমিদুল, মতি, বেগমপুরের আসাদ ও খোকন। থানা, ডিবি পুলিশ ও সাংবাদিকদের নাম ভাঙিয়ে এ জুয়ার আসর থেকে লাখ লাখ হাতিয়ে নিচ্ছে এ জুয়া চক্রটি। এ জুয়ার আসরে সর্বোচ্চ হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে একাধিক জুয়াড়ি।  দীর্ঘদিনের এ ধান্দায় প্রচুর অর্থের মালিক বনে গেছে অভিযুক্ত জুয়ার বোর্ড মালিকেরা। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে নিয়মিত জুয়ার বোর্ড বসানো হচ্ছে ডুগডুগি গ্রামের পুটি রামের বটতলা ও কদমের আম বাগান নামক স্থানে। প্রতিদিন বেলা ১১টার মধ্যে ডুগডুগি বাজারে জড় হন জুয়াড়ীরা। এরপর সেখান থেকে জুয়া চক্রের সদস্যরা তাদেরকে নিরাপদে মাঠে নিয়ে বসান জমজমাট জুয়ার আসর। এ জুয়ার আসরে লাখ লাখ টাকার খেলা হয়। সে টাকা থেকে মোটা অংকের কমিশন কেটে রাখা হয় ডিবি, থানা পুলিশ ও সাংবাদিকদের নাম করে। এছাড়াও জুয়াড়ীদের ব্যবহিৃত মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহন গুলোও রাখা হয় নিরাপদে। তার জন্যও রয়েছে নিযুক্ত পাহারাদার। যাদেরকে নিয়মিত দেয়া হয় পারিশ্রমিক। তাছাড়াও দুপুরে খাবার জন্য সেখানে বসানো হয় হোটেল ও আনন্দ ফ্রুর্তির জন্য থাকে বিভিন্ন প্রকার মাদকের ব্যবস্থা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন জুয়াড়ি ও পাহারাদার বলেন, সকাল হলে বিভিন্ন স্থান থেকে জুয়াড়ীরা এসে ভিড় করে ডুগডুগি বাজারে। এরপর তাদের ব্যবহৃত যানবাহন গুলো নিরাপদে রাখা হয়। জুয়ার বোর্ডে কেউ হেরে গেলে তাকে চড়া সুদে টাকাও ধার দেয়া হয়। কেউ কেউ আবার মোটরসাইকেল, স্বর্ণের চেইন, আংটিও বন্ধক রেখে টাকা নেন জুয়ার বোর্ড মালিকদের থেকে। জুয়ার মাঠের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সড়কে পারিশ্রমিক দিয়ে পাহারা রাখা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেলে খবর পৌঁছে যায় খেলার মাঠে। 

দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, জুয়া খেলা হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিক্তিতে ৫/৬দিন পূর্বে আমার ১০/১২ জন অফিসার জুয়ার আড্ডায় অভিযান চালায়। আমাদের অভিযানে খবরে তারা আগেই পালিয়ে যায়। তখন আমরা তাদের ফেলে রেখে যাওয়া পাটিসহ অন্য সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুড়িয়ে ফেলি। তারা একটি বাগানের মধ্যে জুয়াড় আসর বসায়। বিভিন্ন পয়েন্টে তাদের লোক বসানো আছে। কেউ অভিযানে গেলে আগেই তারা জানিয়ে দেয়। আমরা অভিযান অব্যহত রাখবো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *