মেহেরপুর অফিস
মেহেরপুরে বহুল আলোচিত হোটেল আটলান্টিকা কান্ডে পর্নোগ্রাফি মামলায় এজাহারভুক্ত ৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও জরিমানা করেছে আদালত। রবিবার দুপুরে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক নাসির উদ্দিন ফরাজী এ আদেশ দেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা থানার দুলালনগর গ্রামের নাজমুল হোসেনের মেয়ে নাজনীন খান প্রিয়া, মেহেরপুর পৌর শহরের শিশুতলা পাড়ার মতিয়ার রহমানের ছেলে মামুন জোয়ার্দ্দার, একই এলাকার কিয়াম উদ্দিনের ছেলে মতিয়ার রহমান, এনামুল হক বাবলুর ছেলে হাসিবুল হক জয়, বড় বাজার এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে নেহাল আল মুকিত, সদর উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের এসকেন আলীর ছেলে শাহাজাহান আলী। রায়ে একই সঙ্গে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রনণ আইন ৮(১) ধারায় প্রিয়াকে ৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং এক লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড, মামুন জোয়ার্দ্দারকে ৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং দুই লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং একই আইনে ৮(৩) ধারায় দুই বছর কারাদন্ড ও ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড (উভয় সাজা একত্রে কার্যকর হবে), পলাতক আসামী হাসিবুল হক জয়কে ৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং দুই লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং একই আইনে এক বছর কারাদন্ড ও ১ লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড, নেহাল আল মুকিতকে ৬ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং দুই লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং একই আইনে ৮(৩) ধারায় ১ বছর কারাদন্ড ও ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড (উভয় সাজা একের পর এক কার্যকর হবে), শাহাজান আলীকে ২ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং ১ লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিদের অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের বেকসুর খালাস দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সাইদুর রাজ্জাক রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই বিজ্ঞ বিচারক দোষীদের শাস্তি দিয়েছেন। রায় দৃষ্টান্তমূলক হয়েছে। এতে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হলো, অপরাধ করলে কেউ ছাড় পায় না। মেহেরপুরের মানুষ ন্যায় বিচার পেয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ নভেম্বর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের এনজিও কর্মী মনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-২২)। মামলায় মূল আসামি করা হয় নাজনীন খান ওরফে প্রিয়া খানকে। তাকে গ্রেফতারের পর আদালতের অনুমতি নিয়ে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেইল চক্রের চিত্র।