স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন চাকরি প্রত্যাশীরা। গতকাল সোমবার সকাল থেকেই তারা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এর সাথে সংহতি জানান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।
চাকরি প্রার্থীদের অভিযোগ গত ২০ জুন চুয়াডাঙ্গায় অনুষ্ঠিত স্বাস্থ্য সহকারী পদের নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে। পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস গেছে। অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ দেখিয়ে চূড়ান্ত করা ও এক এলাকার প্রার্থীকে আরেক এলাকায় মনোনীত করার মতো অনিয়ম হয়েছে। আমরা প্রমাণসহ অভিযোগ তুলেছি। অথচ এতকিছুর পরও তড়িঘড়ি করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে চাই সিভিল সার্জন। আমরা এই নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল চাই, সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দীনের প্রত্যাহার চাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
অবস্থানের সময় হাসপাতাল চত্বরে উত্তেজনা ছড়ালে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বললে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। এ স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে এ সংক্রান্ত সংবাদ জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে গুরুত্বসহকারে প্রচারিত হলে ৩ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রসংগত গত ২০ জুন জেলার ১৯টি কেন্দ্রে স্বাস্থ্য সহকারী পদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৩৯টি শূন্য পদের বিপরীতে আবেদন করেছিলেন ১৩ হাজার ৬৬৮ জন। কিন্তু পরীক্ষায় অংশ নেন মাত্র ৪ হাজার ৮৭৪ জন। দুইদিনের মাথায় ২২ জুন চুড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়। ফলাফলে কিছু অনুপস্থিত প্রার্থীর নাম উত্তীর্ণ তালিকায় থাকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। পরদিনই সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দীন বলেন, “এই পরীক্ষা শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। কোনো ধরনের অনিয়ম বা প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট নিয়োগ বোর্ডের অধীনে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, যেখানে ছিলেন খুলনা বিভাগীয় পরিচালক, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র সহকারী সচিব, পিএসসির প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসনের একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এবং আমি নিজে।”
তবে চাকরি প্রত্যাশীরা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য মানতে নারাজ। তারা দাবি করছেন, তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে হবে।