চুয়াডাঙ্গায় মাদক মামলায় ইস্রাফিলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা

স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গায় মাদক মামলায় ইস্রাফিল(৩৯) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল রবিবার বেলা ২টায় চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ম আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আলামিন মাতুব্বর আসামীর উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। মামলার অপর দু’আসামীকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ইস্রাফিল দামুড়হুদা উপজেলার হরিশ্চন্দ্রপুর নতুন পাড়ার মৃত ওসমান গনির ছেলে। এছাড়া এজাহারে উল্লেখিত একই এলাকার মৃত আকবর আলীর ছেলে ফরজ আলী ও ফকির মোহাম্মদের ছেলে আশরাফুলকে এ মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৬ আগস্ট দামুড়হুদার উজিরপুর মাদ্রাসার সামনে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল অভিযান চালায়। ডিবি এসআই মো. আমির আব্বাস ও সঙ্গীয় ফোর্স পুরাপাড়া মোড়ে জনৈক টিপু সুলতানের চায়ের দোকানের সামনে সন্ধ্যা ৭টার দিকে অবস্থান নেয়। এ সময় একটি বিচালি বোঝাই আলমসাধুকে সিগন্যাল দেয়া হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তিন মাদক পাচারকারীর মধ্যে দুজন পালিয়ে গেলেও চালক ইসরাফিলকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে বিচালির গাদার ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় ১০০ বোতল ফেনসিডিল। ওই সময় আটককৃত ইসরাফিল জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, পলাতক দুই ব্যক্তি ফরজ আলী ও আশরাফুল ইসলাম এই ফেনসিডিলের মালিক। পরবর্তীতে তদন্ত শেষে দামুড়হুদা থানা পুলিশ ১৯৯০ সালের মাদক প্রণা নিয়ন্ত্রন আইন (সংশোধনী (০৪) এর ১৯(১) টেবিলের ৩(খ) ধারায় বিক্রির উদ্দেশ্যে কোডিনযুক্ত মাদকদ্রব্য ফেনডিসিল নিজ দখলে রাখার অপরাধে ২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর ইসরাফিলকে ১নং আসামি ও ফরজ আলী এবং আশরাফুলকে পলাতক আসামি হিসেবে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। দীর্ঘদিন মামলাটি চলমান থাকার পর ৬ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে রবিবার আদালত ইসরাফিলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে ভারত থেকে ফেনসিডিল এনে অভিনব কৌশলে জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করছিল বলে জানা যায়। উদ্ধারকৃত ফেনসিডিলের আনুমানিক মূল্য ধরা হয় ৬০ হাজার টাকা ও ব্যবহৃত আলমসাধুর মূল্য ৭০ হাজার টাকা, মোট জব্দ মালামালের মূল্য দাঁড়ায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
মাদক মামলায় এ রায়ের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মানজার আলী (এপিপি) বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। সমাজে যারা এখনো মাদক বিক্রি করে, তাদের জন্য এটি একটি কঠোর বার্তা। আদালতের এমন রায় মাদক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি মাদক ব্যবসায়ীদের মনে ভয় জাগাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *