দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ-ভারতে পাসপোর্ট ধারী যাত্রী যাতায়াতকারির সংখ্যা কমতেই আছে সরকারের রাজস্ব হ্রাস জীবিকা নির্বাহ কারিদের হা হুতাস ব্যবসায় পড়েছে ভাটা

দর্শনা অফিস
চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রাণকেন্দ্র বলা হয় শিল্পনগরি ও সীমান্ত শহর দর্শনাকে। যেখানে রয়েছে আন্তর্জাতিক স্থল চেকপোস্ট। গত মে মাসে সেই চেকপোস্ট দিয়ে বৈধ পথে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াতকারির সংখ্যা কমে নেমে এসেছে শুন্যের কোঠায় বলা যায়। মেডিক্যাল ও স্টুডেন্ট ভিসায় গড়ে প্রতিদিন ৫০/৬০ জন করে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত করছে, যা রীতিমত একটি হাস্যকর ঘটনা বলা যায়। সম্প্রতি বাংলাদেশী নাগরীকদের জন্য ভারত সরকারের ভিসানীতির প্রভাব পড়েছে এ চেকপোস্টে। তবে স্বাভবিক হতে সময় লাগতে পারে বলে অনেকেই মনে করেন।
ইমিগ্রেশন অফিস সুত্রে জানা যায়, দেশের দক্ষিণঞ্চলের একমাত্র স্থলবন্দর বেনাপোল, তারপরের স্থান হলো দর্শনা। পূর্বে এই দর্শনা স্থল চেকপোস্ট দিয়ে দুদেশের মধ্যে প্রায় দু আড়াই হাজার পাসপোর্টধারি যাত্রী যাতায়াত করতো। কিন্ত বর্তমানে যাত্রী হ্রাস পেতে পেতে প্রতিদিন যাতায়াত করছে মাত্র ৫০ থেকে ৬০ জনের মত। গত ৩১ মে পর্যন্ত একটি জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশীরা গত একমাসে ভারতে মেডিক্যাল ও স্টুডেন্ট ভিসায় প্রবেশ করেছে মাত্র ১১৪৪ জন এবং ফিরে এসেছে ১৪৭২জন, ভারতীয়রা ভ্রমন ভিসায় বাংলাদেশে এসেছে ৪২৭ জন এবং ফিরে গেছে ৬৬১ জন। এতে কি পরিমান বাংলাদেশ সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে এবং বঞ্চিত হচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দর্শনা এলাকার একজন জন প্রতিনিধি জানালেন, দর্শনা চেকপোস্টকে কেন্দ্র করে এখানে দীর্ঘদিন থেকে গড়ে উঠেছে ছোট বড় মাঝারি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। পাসপোর্ট যাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ায় তারা হয়ে পড়েছে বেকার। সাথে সাথে ভ্যান রিকসা, অটো,সিএনজিসহ অন্যরাও কাজ না পেয়ে বড় বিপদের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে, কারন তারাও তো চড়া সুদে, ধার দেনা ও ঋন করে এ সব রিকসা ভ্যান কিনে মহাবিপাকে রয়েছে বলে জানালেন।
কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি নাম না বলার শর্তে বল্লেন, গত ৫ই আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পরই এ চেকপোস্টে কমতে থাকে যাত্রী সংখ্যা, বর্তমানে কমতে কমতে শুন্যের কোঠায় নামার মত অবস্হা হয়ে পড়েছে। তবে মেডিক্যাল ও স্টুডেন্ট ভিসা চালু থাকলেও ,বাংলাদেশীদের জন্য ভ্রমন ভিসার বিধি নিষেধ আরোপ করা রয়েছে। কিন্ত ভারতীয়দের যাতায়াত স্বাভবিক আছে বলে জানান তিনি।
দর্শনা জয়নগর চেকপোস্টের একজন রাজস্ব কর্মকর্তা জানান, আগে দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন প্রায় দেড় থেকে দু হাজার পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত করতেন, প্রতি যাত্রী থেকে রাজস্ব হিসেবে একহাজার টাকা করে সরকারি কোষাগারে জমা হতো। গড়ে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হতো। আর এখন নেমে এসেছে মাত্র ৫০/৬০ জনে। এখন কি পরিমাণ সরকারি রাজস্ব হ্রাস পেয়েছে তা ক্ষতিয়ে দেখলেই বোঝা যায়। তিনি বড় আক্ষেপ করে জানালেন বাংলাদেশের মধ্যে দর্শনা একটি অন্যতম বহুল পরিচিত নাম এই দর্শনার নাম ইতিহাসের পাতায় পড়েছি, আর সেই দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে বিশ্বের বহু পর্যটকরা ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করে থাকে। কিন্ত এ পথে বাংলাদেশীদের জন্য ভারতের ভ্রমন ভিসা বন্ধ থাকায় যাত্রী ও পর্যটক সংখ্যা ব্যাপক আকারে কমেছে। ভ্রমন ভিসা চালু না হলে এ পথে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত বন্ধ হওয়ার উপক্রম হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।
এই বিষয়ে দর্শনা ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রমজান আলী জানান, ভিসা সংক্রান্ত বিষয়ের কারণে যাত্রী আসা যাওয়া কমে আসছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *