চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত

স্টাফ রির্পোটার: ‘দ্বন্দ্বে কোন আনন্দ নাই, আপস করো ভাই লিগ্যাল এইড আছে পাশে, কোনো চিন্তা নাই’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় জজকোর্ট চত্বরে কবুতর অবমুক্ত ও বেলুন উড়িয়ে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. আকবর আলী শেখ। শোভাযাত্রাটি কোর্টমোড়, বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বর প্রদিক্ষণ করে জেলা আইনজীবী সমিতিতে এসে শেষ হয়।
এরপর জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির আয়োজনে চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. আকবর আলী শেখ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। লিগ্যাল এইড অফিসার সহকারী জজ মোরশেদ আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্র্যাইব্যুনালের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিমুল কুমার বিশ^াস, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন কুমার রাজবংশী, সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি কোর্ট পরিদর্শক নাসির উদ্দিন মৃধা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাঈদ মাহমুদ শামীম রেজা ডালিম, সাধারণ সম্পাদক আহসান আলী, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মারুফ সরোয়ার বাবু, সরকারি কৌশুলী (জিপি) আব্দুল খালেক। অন্যানোর মধ্যে আলোচনা সভায় লিগ্যাল এইডের উপকারভোগী নাসরিন ইসলাম, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক জহির রায়হান ও প্যানেল আইনজীবী রফিকুল ইসলাম (১) বক্তব্য রাখেন।


এর আগে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষ্যে জেলা ও দায়রা জজ মো. আকবর আলী শেখ, প্যানেল আইনজীবী অ্যাড. আফরুজা আক্তারকে ক্রেস্ট দিয়ে পুরস্কৃত করেন ।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা ও দায়রা জজ মো. আকবর আলী শেখ বলেন, ২০১৩ সাল থেকে ২৮ এপ্রিল জাতীয় আইনগত দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। বিভিন্ন আইন ও নির্দেশনা আছে। যেগুলোর উদ্দেশ্যে হলো মানুষকে আইনী সেবা দেয়া। সুপ্রীম কোর্ট কমিটি, জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি ও শ্রম আদালতের বিশেষ কমিটি রয়েছে। আইনী সহায়তা প্রত্যাশীদের সরকারি সহায়তা প্রদান করা। সরকার লিগ্যাল এইড অফিসার নিয়োগ দিয়েছেন। এটা একটা ফলপ্রসু পচেষ্টা। যারা অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া মানুষ, তাদের আইনী সেবা দেয়া। ব্যক্তিগত আয় না থাকায় গৃহবধুরা আইনের কাছে যেতে পারে না। ফলে রাষ্ট্র তাদের জন্য এ আইন তৈরী করেছে। যারা আর্থিক সহযোগিতা দিতে পারে না, তাদের জন্য এ আইন তৈরী করা হয়েছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে চলার জন্য রাষ্ট্র ও দেশকে স্বাগত জানাই। মানুষ সেবা নিতে আসবে, তাদের জানাতে হবে। সেজন্য প্রচারণা দরকার। প্রচারণা অব্যাহত রাখতে হবে। গ্রাম পর্যায়ে মানুষের কাছে পৌছাতে হবে। এটা সরকারে একার দায়িত্ব না। সবার অংশগ্রহনের মাধ্যমে মানুষকে জানাতে হবে। বিনামূল্যে মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য সরকার আইন প্রণয়ন করেছে তা মানুষকে জানানো ও উজ্জীবিত করতে হবে। আইনগুলো কল্যাণমুখী। প্যানেল আইনজীবীদের সম্মানীটা কিছুই না। অনুরোধ রাখবো সম্মানীটা যেন সম্মানের সাথে বাড়ানো হয়। যারা অসহায় হিসেবে আসবেন , তাদের অবস্থাটা নিয়ে ভাববেন। এখানে যেন কোন খাদ না থাকে। আপনারা দরদ দিয়ে ও মানসিকতা দিয়ে সেবাটা দেবেন। এটা একটা টীম ওয়ার্ক।
প্রসঙ্গত : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা গঠন করেছে। প্রতিটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে লিগ্যাল এইড অফিসার সহকারী জজ পদমর্যাদার একজন বিচারক নিয়োগ করা হয়েছে। এখানে সরকারি খরচে দেওয়ানী, ফৌজদারী ও পারিবারিক মামলা, অস্বচ্ছল, দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মামলা, আইনগত পরামর্শ ও আপসযোগ্য বিরোধ/মামলা মিমাংসা করে থাকে। সরকার আপনার মামলা পরিচালনার জন্য বিনা খরচে আইনগত সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। বিনামূল্যে আইনগত পরামর্শ ও তথ্য সেবার জন্য জাতীয় হেল্প লাইন ১৬৪৩০ (টোল ফ্রি) নাম্বারে কল করতে পারবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *