চুয়াডাঙ্গায় আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় জেলা প্রশাসক জহিরুল ইসলাম

স্টাফ রিপোর্টার

চুয়াডাঙ্গায় আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এসভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে সভায় জেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সামাজিক শৃঙ্খলা, মাদক প্রতিরোধ, নারী ও শিশু নির্যাতন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

সভায় জেলার বিভিন্ন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়। স্থানীয় সমস্যাগুলো সমন্বিতভাবে বিশ্লেষণ করে আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবসম্মত সমাধান করার লক্ষ্যে আলোচনা করা হয়। সভায় জানানো হয়, জেলায় সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক। তবে সীমান্ত এলাকায় মাদক ও চোরাচালান রোধে যৌথ টহল কার্যক্রম আরও জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। যেখানে বিভিন্ন দপ্তরের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়।

                সভায় গত মাসের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য পেশ করেন সহকারী কমিশনার আশফাকুর রহমান। তিনি জানান, অক্টোবর মাসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্তৃক ছয়টি অভিযানে ১১টি মামলায় ১১জনকে ১ হাজার ৯৫০ টাকা অর্থদণ্ড ও বিভিন্ন কারাদণ্ড আরোপ করা হয়।  সার ব্যবস্থাপনা আইনে দুটি অভিযানে দুটি মামলায় ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক ৫টি অভিযানের ১০টি মামলায় ১ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সড়ক পরিবহন আইনে ১৯ টি অভিযানে ৯৮ টি মামলায় ৪২ হাজার ১৫০ টাকা জরিমানা করা। পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে দুটি অভিযানে চারটি মামলায় ৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়। তাছাড়া গত অক্টোবর মাসে পুলিশ বিভাগ কর্তৃক ৩টি এয়ারগান, ১টি শাটারগান, ৫টি সীশা কার্তুজ, ১টি রাইফেলের স্কোপ, ৬টি রাম দা, ২টি তরবারি, ১টি চাইনিজ কুড়াল, ১টি চাপাতি ও ১টি ঢাল উদ্ধার করা হয়।

সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, অপরাধ দমন ও সামাজিক ব্যাধি রোধে প্রশাসনের কার্যক্রম আরও গতিশীল হয়েছে। আত্মহত্যা প্রতিরোধে ইতোমধ্যে জনসচেতনতামূলক উদ্যোগ শুরু হয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে নানা আয়োজন হাতে নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মাদক, বাল্যবিয়ে ও আত্মহত্যা এই তিনটি সামাজিক ব্যাধি দূর করতে সমাজের প্রতিটি স্তরে আলোচনা ও উদ্যোগ নিতে হবে। শুধু সভা সেমিনারে সীমাবদ্ধ না থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিতর্ক ও গণআলোচনার মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।

সভায় জেলা প্রশাসক সকল দপ্তরকে নিজ নিজ দায়িত্ব সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন এবং নাগরিক সেবার মান উন্নয়নে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বিপিএম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম সাইফুল্লাহ, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আওলিয়ার রহমান, ঔষধ প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়ক তাহমিদ জামিল, শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি এম জেনারেল, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজিব হাসান কচি প্রমুখ।

সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন কুমার রাজবংশী, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মেহেদী, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিথি মিত্র, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল আমিন, পাবলিক প্রসিকিউটর মারুফ সরোয়ার বাবু, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিদ্দিকা সোহেলী রশীদ, বিএনপি নেতা খন্দকার  আব্দুল জব্বার সোনা, ছাত্রনেতা আসলাম হোসেন অর্ক এবং প্রথম আলো জেলা প্রতিনিধি শাহ আলম সনি উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *