চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা কমেছে ৫ ডিগ্রি, বয়ে যাচ্ছে মাঝারি শৈত্য প্রবাহ

স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গায় একদিন ব্যাবধানে তাপমাত্রা কমে গেছে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত মঙ্গলবার জেলায় ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গতকাল বুধবার তা কমে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়েছে। এর আগে ২৯ ডিসেম্বর ১২.৬ ডিগ্রি ও ২৮ ডিসেম্বরও ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রেকর্ড করা হয়। এ কারনে  চারদিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি। একদিনের ব্যবধানে ৫ ডিগ্রী তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় এবং সূর্যের আলো দেখা না দেওয়ায় তীব্র শীতে  জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। অনেক মানুষ ও পশু-পাখি থরথর করে কাপছে। সর্বোচ্চ ও সর্বনিন্ম তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায়  মারাত্মক শীত অনুভূতি হচ্ছে।
সারা দেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গা জেলার ৪ উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে উত্তরের হিমেল হাওয়া সাথে ঘন কুয়াশা। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মত কুয়াশা ঝরছে। এ কারনে মানুষের স্বাভাবিক কর্মজীবন ব্যাহত হচ্ছে। নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ সবচেয়ে বেশী বিপাকে পড়েছে। তারপরও জীবিকা নির্বাহের তাগিদে বাইরে বের হতে হচ্ছে। অনেকেই শীতের হাত থেকে বাঁচতে খুড় খুটো জ্বেলে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন। দুর্ঘটনা এড়াতে চালকরা হেডলাইট জ্বালিয়ে ও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করে চলাচল করছেন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোত  ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানা গেছে।
গত কয়েকদিন রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি অনেক কমে গেছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া সহজে কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। বেড়ে গেছে গরম কাপড় জ্যাকেট, সোয়েটার, টুপি, মাফলার ও মোজার চাহিদা। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সাতগাড়ী মোড়ের দোকানী বারেক আলী বলেন, কয়েক দিনের প্রচন্ড শীতে হাত মোজা, পা মোজা ও টুপি বেচাকেনা অনেক বেড়ে গেছে। সেই সাথে দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফুটপাতের খুচরা ফল ব্যবসায়ী কাওসার আলী বলেন, সকাল দশটায় ফল বেঁচতে এই ফুটপাতে বসেছি। সকাল থেকে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে যার কারণে ক্রেতার সংখ্যা নেই বললেই চলে। এই ফল বেঁচে আমার সংসার চলে। তীব্র শীতে ফলের মিষ্টতা কম হয় যার কারণে ফলের চাহিদা একেবারেই কম। টাকা উপার্জন না করতে পারলে ছেলে মেয়ের মুখে ভাত জুটবে না। যার কারনে শীত উপেক্ষা করেই ফল বেঁচতে তীব্র শিতে কাঁপতে কাঁপতে বসে আছি। শীতের কারণে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ সবথেকে বেশি।
ভ্রাম্যমাণ মাছ ব্যবসায়ী আক্কাস আলী বলেন, সারাদিন ঘুরে ঘুরে মাছ বিক্রি করি। তীব্র শীতের কারণে সকালে বের হতে পারি না। কয়েক দিন ধরে চুয়াডাঙ্গাতে খুব বেশি শীত পড়ছে। যার কারনে ব্যবসা কম হচ্ছে। পানিতে হাত দিয়ে বার বার মাছ বের করতে হয় যার কারণে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। তীব্র এর শীতে আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান  জানান, বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা এ মৌসুমে জেলায়  সর্বনিন্ম তাপমাত্রা। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৬ শতাংশ। আগামী দুই এক দিন পর তাপমাত্রা আরে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *