স্টাফ রিপোর্টার
উৎসবমুখর পরিবেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গার দুটি সংসদীয় আসনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে মোট ১১ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন গতকাল সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেনের নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে এসকল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়।

চুয়াডাঙ্গা-১ সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী প্রার্থীরা হলেন— বিএনপির মনোনীত প্রার্থী শরীফুজ্জামান শরীফ, জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল, এনসিপির মনোনীত প্রার্থী মোল্লা এহসান ফারুক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী হাসানুজ্জামান সজিব, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী জহুরুল ইসলাম এবং আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টির) মনোনীত প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গা-২ সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন— বিএনপি মনোনীত প্রার্থী চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু, জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী জেলা জামায়াতের আমীর রুহুল আমিন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনোনীত প্রার্থী নুর হাকিম, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টির) মনোনীত প্রার্থী আলমগীর হোসেন এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মো. হাসানুজ্জামান সজিব।
মনোনয়নপত্র দাখিলকালে প্রার্থীদের সঙ্গে নিজ নিজ দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় নির্বাচন ঘিরে এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ ও রাজনৈতিক তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গার দুটি সংসদীয় আসনে মোট ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। এর মধ্যে গতকাল সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১১ জন প্রার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
অপর দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মিলিমা ইসলাম বিশ্বাস মনোনয়ন তুললেও মনোনয়ন দাখিল করেননি।

এসময় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই প্রশাসন তার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। নির্বাচনের জন্য প্রশাসনিকভাবে যতটুকু প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন তা ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হওয়ার পথে। চুয়াডাঙ্গাতে দুটি আসনে ৩৫৪ টি কেন্দ্র রয়েছে। যে সকল কেন্দ্রগুলো মেরামতের প্রয়োজন ছিল সেগুলো মেরামত করা হয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে সকল প্রার্থীকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছে। আশা করি সকলের সহযোগিতায় আমরা একটি ভালো নির্বাচন সকলকে উপহার দিতে পারব।
মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, বিগত ১৭ বছর জনগণ তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। জনগণ যাতে স্বাধীনভাবে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে এবং সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এটি আমাদের সবার প্রত্যাশা। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র পক্ষ থেকে নির্বাচনী আচরণবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালনের জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত নির্বাচনী পরিবেশ ভালো রয়েছে। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা আশাবাদী।

এদিকে জেলা জামায়াতে আমীর রুহুল আমিন বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসীর আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমরা কাজ করতে চাই। বিগত ৫৪ বছরের যে না পাওয়ার বেদনা সেটি আমরা ভোলাতে চাই। ৫ ই আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী দেশের জনগণের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে গেছে। ২৪-এর চেতনায় একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে জনগণের রায়ে বিজয়ী হলে ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করব এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ থাকব।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালের ২০ ডিসেম্বর প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৭ হাজার ৪৮১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫১ হাজার ৯৭১ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৫৫ হাজার ৫০৩ জন।
অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৬ হাজার ১৯৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪৩ হাজার ৩১ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৪৩ হাজার ১৬৩ জন।



