চুয়াডাঙ্গায় ঘন কুয়াশায় শীতের প্রকোপে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত

স্টাফ রিপোর্টার
ঘন কুয়াশা ও মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারনে চুয়াডাঙ্গায় গতকাল সূর্যের দেখা মেলেনি। এতে দিনভর বেড়েছে শীতের প্রকোপ। তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন। বিশেষ করে যারা নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ আছেন, তাদের দুর্ভোগ ছিলো চরমে। ঘন কুয়াশা আর সেই সাথে বাতাসের তীব্রতা ছিল অনেক বেশি। শীত ও ঠান্ডার কারণে জেলা জুড়ে বেড়েছে সর্দিজ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগ।  চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এসব রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে । প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। শীতের কারণে খেটে খাওয়া মানুষকে বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে । বেলা বাড়লেও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মত কুয়াশা ঝরছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। তীব্র ঠান্ডার কারণে মানুষের উপস্থিতি তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। ঠান্ডা থেকে বাঁচতে অসহায় মানুষগুলো সড়কের পাশে খরকুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা নেয়ার চেষ্টা করছে।
দিনমজুর ছমির উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৬ টার সময় কাজে এসেছি, ঘন কুয়াশা ও তীব্র ঠান্ডার কারণে শরীরে কাঁপুনি ধরে যাচ্ছে। তবুও কিছু করার নেই পেটের দায়ে কাজে আসতে হচ্ছে কাজ না করলে আমাদের অন্ন জুটবে না। সারাদিনই এমন কুয়াশার মধ্যে কাজ করলে অসুস্থ হয়ে পড়তে হয় আমাদের। তবে কিছু করার নেই যতই ঠান্ডা পড়ুক কাজ করতেই হবে।
গাইদঘাট এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, তীব্র শীতে মানুষজন কেউ বাহির হচ্ছে না তাই ঠিকমত পোষাক বিক্রি হচ্ছে না। তবে যেদিন আবহাওয়া পরিষ্কার ছিল সেদিন কাপড়ের দোকানে ভিড় ছিল বেশ। এই তীব্র শীতে গরম কাপড়ের চাহিদার রীতিমতো বেশি। তবে ঘন কুয়াশার কারণে মানুষ খুব একটা বাইরে বের হচ্ছে না যার কারণে বেচা বিক্রি একটু কম।
দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের কোমরপুর এলাকার বাসিন্দা ইসমাইল বলেন, সকাল থেকে ঠান্ডায় অবস্থা খুব খারাপ। মাঠে কাজ করা যাচ্ছে না। ক্ষণিকেই হাত-পা বরফ হয়ে যায়। সকালে বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। আমরা যারা দিন এনে দিন খাই, তারা সবাই কষ্টে আছি।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলা গতকাল রবিবার  সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে  ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তবে সারাদিনই ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন ছিল। কয়েকদিন ঘন কুয়াশাসহ তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে ৩১ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারির মধ্যে মৃদু  শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। পরবর্তীতে তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে।
এদিকে গত শনিবার গভীর রাতে  জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার চাঁদপুর আশ্রয়ন প্রকল্প, আলমডাঙ্গা উপজেলার খুদিয়াখালী ও নতিডাঙ্গা আশ্রয়ন প্রকল্প স্থানে শীতার্ত ও অসহায় জনগোষ্ঠীর মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করা হয়। কম্বল  বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন  সিনিয়র সহকারী কমিশনার এস. এম. আশিস মোমতাজ, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা শহিদুল ইসলাম ও  মোঃ ফাহাদ চৌধুরী।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *