স্টাফ রিপোর্টার
কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে চুয়াডাঙ্গা। একই সাথে বেড়ে গেছে শীতের তীব্রতা। ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মৃদু শৈত্য প্রবাহের কাছে পৌছে গেছে চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা। গতকাল বুধবার চুয়াডাঙ্গার সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা। ক্রমেই শীত বাড়ায় বড় প্রভাব পড়েছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায়। বিশেষ করে রিকশাচালক ও নিম্নআয়ের মানুষের কষ্ট আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে। উত্তরের হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
হাসপাতাল গুলোতে ঠান্ডা জনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। বয়স্ক ও শিশুরা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। গতকাল বুধবার ভোর রাত থেকে চুয়াডাঙ্গা কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে। ২০০ মিটার দুরের কোন কিছু দেখা যাচ্ছে না। কুয়াশার কারনে সড়কগুলোতে যানবাহন হেডলাইন জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। বেলা ১১ দিকে কুয়াশা কেটে গিয়ে সূর্যের দেখা দেয়। এরপর সূয্যের উত্তাপে কিছুটা স্বস্থি ফিওে পায়। তবে বিকাল হতে মিনমিনে বাতাসে আবার শীতের কাঁপুনি ধরে যায়। হিমেল বাতাসের কারনে সন্ধ্যার পর পর রাস্তাঘাট ফাঁকা হতে থাকে। খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসই। যা এই মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ও দেশেরও সর্বনিন্ম তাপমাত্রা। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ।
এদিকে জীবননগর প্রতিনিধি হাসান নিলয় জানান, পৌষ মাসের শুরুতে জীবননগরে তীব্র শীত, হিমেল বাতাস ও ঘন কুয়াশায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। হাড় কাঁপানো শীত আর ঘন কুয়াশার কারনে জেলার জীবননগর উপজেলার মানুষদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা দূর্বিষহ হয়ে পড়েছে। তীব্র শীতের কারনে প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া তেমন কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। রাস্তাঘাটে হাটে-বাজারে লোকজনের উপস্থিতি একেবারেই কম। কমে গেছে যানচলাচল।ভ্যান,রিকশা,সিএনজি ইজিবাইক চালকেরা অলস ভাবে বসে সময় কাটাচ্ছেন।
এতে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষগুলো। বিভিন্ন স্থানে খড়কুটোর আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন অনেকেই। উষ্ণ কাপড়ের দোকান গুলোতে বেচাকেনা বেড়ে গেছে। নিম্ন আয়ের মানুষেরা ফুটপাতের দোকানগুলো থেকে পুরাতন কাপড় কিনে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন। ঘন কুয়াশার কারনে দিনের বেলাতে হেড লাইট জ্বালিয়ে যানচলাচল করতে দেখা গেছে। জীবিকার তাগিদে বসে নেই দিনমজুর,কৃষক ও শ্রমিকেরা। তীব্র শীত কে উপেক্ষা করে তারা কৃষি খামারে কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় কৃষি জমির ফসলের ক্ষতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বোরো ধানের বীজতলায় ক্ষতি হচ্ছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষকেরা।
এদিকে তীব্র শীত ও ঠান্ডা বাতাসের কারনে অনেকেই শীত জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা ঠান্ডা,হাঁচি-কাশিও জ্বরে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীত জনিত রোগীদের সংখ্যা বেড়ে গেছে। পৌষ মাসের শুরুতে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে।
দেশের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ১০.৫ ডিগ্রী সেলিসিয়াস



