আলমডাঙ্গা অফিস
আলমডাঙ্গা উপজেলায় হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে সারের ঘাড়তি। ডিলার পয়েন্টে গিয়ে কৃষকরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও প্রয়োজনীয় সার না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এতে ভুট্টা মৌসুমে চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, ডিলার পয়েন্টে সরকার নির্ধারিত দামে সার বিক্রির কথা থাকলেও বাস্তবে তারা চাহিদা মাফিক সার পাচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রেই ডিলাররা সার নেই বলে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। কৃষকদের অভিযোগ, এসব সার গোপনে পাচার হয়ে যাচ্ছে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা সহ খুচরা দোকানে।
এই উপজেলার কৃষকরা জানান, “ভুট্টা রপনের সময় ঘনিয়ে এসেছে। এখন সার না পেলে জমি প্রস্তুুত করা সম্ভব হচ্ছে না। ডিলারদের পয়েন্টে গেলে বলে সরবরাহ কম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, কৃষকদের প্রয়োজনের তুলনায় সার বেশী ব্যবহার করায় ডিলার পয়েন্ট কম দিতে পারে তবে সারের কোন ঘাড়তি নাই। কোথাও কোন অনিয়ম বা পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে এ উপজেলার ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নে সম্প্রতি হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে সার পাচারের ঘটনা। কৃষিকাজের মৌসুমকে সামনে রেখে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সরকারি বরাদ্দের সার গোপনে বিভিন্ন এলাকায় পাচার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ২২ অক্টোবর বুধবার ভাংবাড়িয়া থেকে নসিমন বোঝায় ৪০বস্তা সার মেহেরপুর বাজারে জব্দ করে। তার একদিন পর বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর ২০২৫) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার মহেশপুর মোড়ে ৩০ বস্তা ডিএপি সার পাচারের সময় স্থানীয় জনতা সারসহ এক নসিমন চালককে আটক করে। পরে জানা যায় পাচারের উদ্দেশ্যে সারগুলো পরিবহন করার সময় মহেশপুর মোড়ে এসে গাড়িটি ভেঙে পড়ে। এ সময় স্থানীয় জনতা ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা খাদেমুল বাসারের সহায়তায় ৩০ বস্তা ডিএপি সার জব্দ করে কৃষি অফিস।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করেন, সরকারি বরাদ্দের সার কৃষকদের না দিয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা অবৈধভাবে বিক্রি করছে। এতে কৃষকরা নিয়মিত সার সংকটে পড়ছেন। গত ৪ দিন যাবৎ ভাংবাড়িয়া ইউনিয়ন ডিলারের নিকট ডিএপি বা টিএসপি সার ক্রয় করতে গেলে বলে সার নাই। সারের জন্য একাধিকবার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম কে জানালে তিনি বলেন সার শেষ হয়ে গেছে উপজেলা কৃষি অফিসারের সাথে কথা বলে আগামী রবিবার পর জানাতে পারবো। এদিকে ওই বাজার থেকে সার চোরাই পথে অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে। তাহলে কৃষকদের অবস্থা কি হবে এখন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ডিএপি, ইউরিয়া ও পটাশ সারের চাহিদা বাড়লেও, কৃষকরা যথাসময়ে সার পাচ্ছেন না। অথচ কিছু অসাধু বিক্রেতা গোপনে ট্রাক বা ভ্যানযোগে এসব সার সীমান্তবর্তী এলাকায় পাচার করছে।
স্থানীয় কৃষক সমাজের দাবি প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এই সারের সংকটে এবারের ভুট্টা মৌসুমে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে বলে জানিয়েছে আলমডাঙ্গার কৃষকরা।



