চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবস উদযাপন

স্টাফ রিপোর্টার

‘প্রযুক্তির যুগে সাক্ষরতার প্রসার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯ টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়ে কোর্ট মোড় প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে শেষ হয়। র‌্যালি শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক সোহাগ হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি)  নয়ন কুমার রাজবংশী।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শারমিন আক্তার বলেন, আমাদের চুয়াডাঙ্গা জেলার সাক্ষরতার হার জাতীয় পর্যায়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ আছে। কিন্তু শুধুমাত্র ৭১ বা ৭২ শতাংশ সাক্ষরতার হার আমাদের লক্ষ্য নয়। আমাদের লক্ষ্য হলো শতভাগ সাক্ষরতার হার অর্জন করা। আমরা জানি আমাদের জেলায় দৈনন্দিন শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এতে করে চুয়াডাঙ্গা জেলার সাক্ষরতার হার উন্নীত হবে বলে আমি আশাবাদী।

অনুষ্ঠানে কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মাসুরা মেহজাবিন মাঈশা বলেন, সাক্ষরতা দিবস হল ইউনেস্কো কর্তৃক ঘোষিত আন্তর্জাতিক একটি দিবস। ১৯৬৬ সালে ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনের ১৪ তম অধিবেশনে ২৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৬৭ সালে প্রথম এই দিবসটি উদযাপিত হয়। এই দিবসটি উদযাপনের মাধ্যমে আমরা সাক্ষরতার গুরুত্ব তুলে ধরতে পারি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহিন্দ্র কুমার মন্ডল বলেন, দেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৭.৯০ শতাংশ। সেই তুলনায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পিছিয়ে নেই। এ জেলার সাক্ষরতার হার ৭১.২০ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৭২.০৫ শতাংশ ও নারী ৭০.৩৮ শতাংশ। তবে ধীরে ধীরে এ জেলার সাক্ষরতার হার উন্নীত হচ্ছে। আশা করি চুয়াডাঙ্গা জেলায়  শতভাগ সাক্ষরতার লক্ষ্যে পৌঁছাবে।

সভাপতির বক্ত্যব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নয়ন কুমার রাজবংশী বলেন, সাধারণত আমরা জানি যিনি স্বাক্ষর করতে পারেন তিনিই স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন। এই ধারণাটি পুরোপুরি সঠিক নয়। পরবর্তীতে এই ধারণাটি পরিবর্তিত হয়েছে। যিনি যেকোনো একটি ভাষায় পড়তে এবং লিখতে পারেন তিনি স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তি। সাক্ষরতার সংজ্ঞা আবারও পরিবর্তিত হয়ে বর্তমানে কার্যকরী সাক্ষরতা, ডিজিটাল স্বাক্ষরতা ও মিডিয়া স্বাক্ষরতা এই তিন ধরনের মৌলিক বিষয়গুলো যুক্ত হয়েছে। কেউ শুধু নাম ঠিকানা লিখতে পারলেই তাকে স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন বলা যাবে না। বর্তমানে প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে সকলের স্বাক্ষরতা অর্জন করা খুবই জরুরী।

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, চুয়াডাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোয়েব আক্তার, কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদুজ্জামান, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ প্রমুখ।  এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল নাঈম, চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা মন্ডলী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।

                 মেহেরপুর অফিস জানায়, ‘প্রযুক্তির যুগে সাক্ষরতার প্রসার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা দেশের মতো মেহেরপুরেও যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে নয় টার দিকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসক চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়। র‌্যালির নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ আব্দুল সালাম। জেলা প্রশাসক চত্বর থেকে শুরু হয়ে র্যালিটি চত্তর প্রদক্ষিণ শেষে আবারও একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তরিকুল ইসলাম, জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা সহকারী অফিসার সুররুজ্জামানসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ। র্যালিতে অংশ নেন জেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *