জীবননগর-দত্তনগর সড়কের পাশে প্রায় দুই কি.মি জুড়ে ময়লার স্তূপ চরম দুর্ভোগে পথচারীরা, আবর্জনার পানিতে চর্ম রোগের আশঙ্কা

এম আই মুকুল, জীবননগর

জীবননগর পৌর শহরের দত্তনগর সড়কের পাশে দুই কিলোমিটার জুড়ে গড়ে উঠেছে ময়লার স্তূপ। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী, শিক্ষার্থী ও পথচারীরা। পৌরসভার নির্দিষ্ট ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় শহরের প্রতিদিনের আবর্জনা সড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে জীবননগর-দত্তনগর সড়কের পাশে গেলে দেখা যায়, আবর্জনার স্তুপ থেকে বের হওয়া উৎকট দুর্গন্ধে নাক চেপে ধরে চলতে হচ্ছে পথচারীদের। ময়লার স্তূপের তীব্র দুর্গন্ধে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উক্ত সড়কের কাছেই রয়েছে জীবননগর আলিয়া মাদ্রাসা ও দুটি বেসরকারি মাদ্রাসা। মাত্র ২০০ গজ দূরত্বে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্রছাত্রীদের প্রতিদিন দুর্গন্ধের ভেতর দিয়ে চলাচল করতে হয়। অনেকেই এতে শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগসহ নানাবিধ সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পূর্বে পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তেতুলিয়া গ্রামের বাড়ভাঙ্গা এলাকায় ময়লা ফেলা হতো। তবে এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে সেখানে ময়লা ফেলা বন্ধ হলে বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়াই পৌরসভা সড়কের পাশে ময়লা ফেলা শুরু করে।

শাপলাকলি স্কুলের ছাত্র রিফাত হোসেন বলেন, বর্ষাকালে রাস্তার পাশে জমে থাকা আবর্জনার পানি ভারী যানবাহনের চাপে ছিটকে পথচারীদের গায়ে পড়ে। এতে নানা রোগে ভুগতে হয়। এছাড়া দু’কিলোমিটার রাস্তা পার হতে নাক বন্ধ করে যেতে হয়। শাপলাকলি পাড়ার এক ছাত্রের অভিভাবক আশিকুর রহমান বলেন, ছাত্রছাত্রীদের অনেকে মাস্ক পরে ক্লাসে যায়। পৌর কর্তৃপক্ষকে বারবার অভিযোগ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

পথচারী লিয়াকত আলী বলেন, আমরা এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করি, দুর্গন্ধের কারনে খুব কষ্ট হয়। পচা দুর্গন্ধে মানুষের রোগ বালাই হয়। ভ্যানযাত্রী তানজিরা খাতুন বলেন, এখানে প্রচন্ড দুর্গন্ধ। রাস্তা দিয়ে আসা যায় না। এতোকষ্ট করে চলা যায়?  এজন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যায়গা পরিষ্কার করা দরকার। আরেক পথচারী হামিদুর রহমান বলেন, এটা ব্যস্ততম রাস্তা। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করে। ময়লার স্তূপের দুর্গন্ধের কারণে মানুষ নাকচেপে যেতে বাধ্য হয়।

স্থানীয় সাংবাদিক মাজেদুর রহমান লিটন বলেন, এটা গুরুত্বপূর্ণ একটা রাস্তা। ময়লার স্তূপের কারণে সাধারণ মানুষের চলাচলে চরম বিঘ্ন ঘটছে। ময়লার স্তূপ দ্রুত অপসারণ করা হোক এবং নির্দিষ্ট একটা যায়গায় ময়লার ভাগাড় করা হোক।

জীবননগর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক সৈয়দজাদী মাহাবুবা মঞ্জুর মৌনা বলেন- আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেছি। পৌরসভার ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট কোন জমি নেই। বর্তমানে আমরা জমি খুঁজছি। উপযুক্ত জমি পেলেই আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশবিদদের মতে, জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এভাবে ময়লা ফেলা শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকি নয়, এটি প্রশাসনিক ব্যর্থতারও প্রতিফলন। পৌরসভার উচিত দ্রুত ডাম্পিং স্টেশন নির্ধারণ, আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ এবং স্থানীয়দের অভিযোগ আমলে নেওয়া প্রয়োজন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *