ভেজাল সার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি: চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক

চুয়াডাঙ্গা জেলা সার বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিুরুল ইসলাম

স্টাফ রিপোর্টার
ভেজাল সার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করাই প্রশাসনের মূল লক্ষ্য। কোনো কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য সার ব্যবসায়ীদের সঠিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। সরকার সার খাতে ৩০০% ভর্তুকি দিচ্ছে। ভেজাল দস্তা সারের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে এবং যেকোনো সময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। এছাড়া প্রত্যেক সার দোকানের সারের নমুনা পরীক্ষা করা হবে বলে তিনি জানান। গতকাল রবিবার বেলা সাড়ে ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করবো, দিনশেষে কৃষক যাতে লুজার না হয়। ডিলারদের ব্যবসার পাশাপাশি কৃষকেরাও যাতে লাভবান হন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’ সভায় জানানো হয়, জেলায় বর্তমানে ৫ হাজার ৪০৩ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার মজুদ রয়েছে। পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও গত মাসে অনেক ডিলার সার উত্তোলন কম করেছেন। চলতি মাসেও একই অবস্থা। জেলা প্রশাসক বলেন, যদি ইউরিয়া সারের চাহিদা না থাকে, তাহলে চাহিদাপত্র কমিয়ে আনা উচিত। তিনি আরও বলেন, ‘অন্য সারের চাহিদা বাড়িয়ে ইউরিয়া সারের চাহিদা কমানো হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে। কারণ, এখন পর্যন্ত এত বেশি ইউরিয়া সার মজুদ থাকার কথা নয়।’

ডিলাররা জানান, আগে এপ্রিল, মে ও জুন মাসে সার উত্তোলন ঐচ্ছিক ছিল, যা এখন নিয়মিত হয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের আপাতত আউশ চাষের দিকে নজর রাখার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি বিগত দুই বছরের চাহিদা বিশ্লেষণ করে ইউরিয়া সারের চাহিদা কম মনে হলে, সে অনুযায়ী চাহিদাপত্র দেওয়ার কথা বলেন।
সভায় খুচরা সার ব্যবসায়ীদের জেলার বাইরে থেকে সার কিনে এনে বিক্রির বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়। ডিলারদের কাছ থেকে সার নেওয়ার জন্য তাদের তাগাদা দেওয়ার কথা বলা হয়। জেলা প্রশাসক বলেন, সরকার যেকোনো সময় সার খাতে ভর্তুকি কমিয়ে দিতে পারে।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। তিনি জানান, জেলায় বর্তমানে ৫ হাজার ৪০২ মেট্রিক টন ইউরিয়া, ৩০০ মেট্রিক টন টিএসপি, ৬৮৮ মেট্রেক টন ডিএপি ও ১ হাজার ৪২১ মেট্রিক টন এমওপি সার মজুদ আছে।

সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজানুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক সামসুদ্দোহা, সহকারি বিপণন কর্মকর্তা সহিদুল ইসলাম, তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা সেন দেবাশীষ, আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেহানা পারভীন, জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফসহ সার ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *