আলমডাঙ্গার বাঁশবাড়ীয়ায় তিন সন্তানের জনকের আত্মহত্যা

আলমডাঙ্গা অফিস
আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়ীয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়ীয়া দক্ষিণ পাড়ায় গলায় মাপলাট পেঁচিয়ে আত্মহত্যার মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে বাঁশবাড়ীয়া দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা কাউছার আলীর ছেলে ইকরামুল হক মহন (৩৮) নিজ বসতঘরের আড়ার সঙ্গে মাপলাট পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। ঘটনার দিন সকালে ইকরামুল হক বাড়ির পাশের একটি চায়ের দোকানে গিয়ে চা পান করেন। চা খেয়ে বাড়িতে ফিরে তিনি তার স্ত্রীকে জানান, আমি ঘরের ভেতরে শুতে যাচ্ছি, রান্না শেষ হলে আমাকে ডেকো। এরপর তিনি ঘরের ভেতরে চলে যান। পরে তার স্ত্রী পাশের বাড়িতে যাওয়ায় কিছুটা সময় বিলম্ব হয়। রান্না শেষে তিনি ছেলেকে বলেন বাবাকে ডাকতে। ছেলে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে দেখে, তার বাবা ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে নিচে নামানো হলেও ততক্ষণে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, নিহত ইকরামুল হক (মহন) দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিও থেকে নেওয়া বড় অঙ্কের ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন আর্থিক ও মানসিক চাপে ভুগছিলেন। স্থানীয়দের ধারণা, মানসিক অসুস্থতার সঙ্গে ঋণের চাপেও এ মর্মান্তিক ঘটনার পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে।
নিহত ইকরামুল হক (মহন) দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক। তার আকস্মিক মৃত্যুতে স্ত্রী ও তিন শিশু সন্তানকে ঘিরে পরিবারে নেমে এসেছে চরম শোক ও অনিশ্চয়তা। আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। ঘটনার খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ ও হাটবোয়ালিয়া ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সুরতহাল রিপোর্ট সম্পন্ন করেন।
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) বাণী ইসরাইল বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পারিবারিক কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়। বাদ মাগরিব বাঁশবাড়ীয়া কবরস্থানে জানাজা শেষে মরহুমের দাফন কার্য সম্পন্ন করা হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *