স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গায় টানা দুই দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে পুরো জেলা। সঙ্গে মৃদু বাতাস যোগ হওয়ায় শীতের তীব্রতা আরও একধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। ঘন কুয়াশা ও মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দিনভর বেড়েছে শীতের প্রকোপ। কার্যত দুই দিন ধরে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার লাখো মানুষ। বিশেষ করে যারা নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ আছেন, তাদের জন দুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে।
রবিবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল প্রায় ৯৫ শতাংশ। দুপুরের দিকে ঘন কুয়াশার কারণে আকাশ ছিল ধূসর। বিকেল তিনটার পর কয়েক মিনিটের জন্য সূর্যের আভাস মিললেও তা দ্রুতই মিলিয়ে যায়। এদিকে গত দুই দিন চুয়াডাঙ্গার চারপাশ ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও সূর্যের দেখা মেলেনি। শীত ও কুয়াশায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমূল, দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ। কাজের সন্ধানে বের হতে না পারায় নিম্ন আয়ের মানুষজন পড়েছেন চরম বিপাকে। শীত থেকে বাঁচতে অনেককে খড়, পুরোনো কাপড় জড়িয়ে কিংবা খোলা স্থানে আগুন জ্বালাতে দেখা গেছে।
শীতের প্রভাবে আশংকাজনক হারে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে সর্দি-কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর চাপ লক্ষ্য করা গেছে। শীতের কারণে খেটে খাওয়া মানুষকে বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে । বেলা বাড়লেও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মত কুয়াশাও ঝরছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। তীব্র ঠান্ডার কারণে মানুষের উপস্থিতি তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ঈদগাহ পাড়ার রাজমিস্ত্রি কালাম হোসেন বলেন, সকাল সাড়ে ছয়টার সময় কাজে এসেছি। তীব্র ঠান্ডা ও বাতাসের কারনে কারণে শরীরে কাঁপুনি ধরে যাচ্ছে। তবুও কিছু করার নেই পেটের দায়ে কাজে আসতে হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের যা দাম একদিন কাজে না আসলে আর খাবার জুটবে না। বাধ্য হয়ে কাজে আসা লাগছে।
রিক্সাচালক সাইদুর বলেন, তীব্র শীতে মানুষজন কেউ বাহির হচ্ছে না, তাই ঠিকমত প্যাসেঞ্জার পাওয়া যাচ্ছে না এবং ভাড়া ঠিকমতো হচ্ছে না। আর যেটা হচ্ছে সেটা দিয়ে সংসার চালানো যাচ্ছে না। শীত বাড়ার সাথে সাথে আমাদের জনদুর্ভোগও বেড়েছে। দিনমজুর সাত্তার আলী বলেন, সূর্যের দেখা না পাওয়ায় শীত বেশি পড়ছে। এই তীব্র শীতে সকালে কাজে যাওয়া কষ্টকর হয়ে যায়। কাজ না করলে সংসার চালানো কষ্ট। তাই এই তীব্র শীত উপেক্ষা করেও আমাদেরকে কাজে যেতে হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, কয়েক দিন ধরেই চুয়াডাঙ্গাতে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় সূর্যের আলো প্রায় নেই বললেই চলে। আজ সোমবার দুপুরের পর সূর্যের আলো দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দুই দিন পর মেঘ কেটে গেলে তাপমাত্রা আরো কমে যেতে পারে। এদিকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ও সর্বনিন্ম তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় বেশী শীত অনুভূত হচ্ছে।
দুই দিন ধরে সূর্যের দেখা নেই চুয়াডাঙ্গায় জেঁকে বসেছে শীত, তীব্র শীতে ঘরবন্দি লাখো মানুষ



