প্রিন্সেস রোজি হয়ে আসছেন ভাবনা

বিনোদন ডেস্ক

যাত্রার সঙ্গে আসিফ ইসলামের পরিচয় হয়েছিল শৈশবে। সেই স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করতে ২০১৮ সালে ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ যাত্রাপালা দেখতে যান তিনি। সেখানে গিয়ে তাঁর মনে হয়, যাত্রাশিল্প এখন পরিণত হয়েছে প্রাপ্তবয়স্ক নৃত্য-আসরে। গল্পের চেয়ে দর্শকের আগ্রহ ছিল শহর থেকে আসা একজন নৃত্যশিল্পীকে ঘিরে। কয়েকটি দৃশ্যের পরেই পালা থেমে যায়, দর্শকদের দাবির মুখে অপমানে মঞ্চ ছাড়তে হয় পালার প্রধান অভিনেতাকে। সেই ঘটনা নিয়েই আসিফ ইসলাম বানিয়েছেন ল্যান্ড অব দ্য প্রিন্সেস। নির্মাতা জানান, ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে সিনেমার শুটিং। চলতি বছর জানুয়ারিতে ফরিদপুরের গোবিন্দপুরে হয়েছে শুটিং। ভাবনা ছাড়া এতে আরও অভিনয় করেছেন অরবিন্দু মজুমদার, মাহমুদ আলম, এ কে আজাদ সেতু, জান্নাতুল বাকের খান, সালাউদ্দিন শেখ প্রমুখ।

অভিনয় দিয়ে নজর কাড়লেও সব ধরনের সিনেমায় অভিনয় করতে চান না ভাবনা। নিজেকে যুক্ত করতে চান ভালো আর গল্পনির্ভর সিনেমায়। ল্যান্ড অব দ্য প্রিন্সেস সিনেমার গল্পটা পড়ে তাঁর মনে হয়েছে, এটা আর দশটা সিনেমার মতো নয়। ভাবনা বলেন, ‘আমার ফিলোসফির সঙ্গে সিনেমার ভাবনাটা বেশ যায়। আমি মনে করি, উই লস্ট আর্ট ফর্ম ইন দিস গ্ল্যামারস ওয়ার্ল্ড। যাত্রাশিল্পটার বেলাতেও তা-ই ঘটছে। সেই গল্পটাই তুলে এনেছেন পরিচালক। আমি পরিচালককে বিশ্বাস করেছি, গল্পটাকে বিশ্বাস করেছি, আমার চরিত্রটাকে বিশ্বাস করেছি। নিজেকে চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ৯ কেজি ওজন বাড়িয়েছি। আমি শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পী, কিন্তু এই সিনেমার জন্য প্রিন্সেসদের যে নাচ, সেটা আয়ত্ত করেছি। সহশিল্পীরা সবাই যাত্রাশিল্পী হওয়ায় নিজেকে প্রিন্সেস হিসেবে তৈরি করাটা সহায়ক হয়েছে। আমার বিশ্বাস, সিনেমাটি সব মিলিয়েই স্পেশাল হয়ে উঠবে। দর্শকদের মনে ভাবনার খোরাক জোগাবে।’

নির্মাতা আসিফ ইসলাম বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে সিনেমাটি নির্মাণ করা। সিনেমার পুরো ঘটনাটি আমার চোখের সামনে ঘটেছিল। সেই অস্বস্তিকর রাতেই আমি গভীরভাবে উপলব্ধি করি, যাত্রা কীভাবে বদলে গেছে, কীভাবে টিকে থাকার লড়াই করছে এমন এক সময়ে, যখন ঐতিহ্য আর সময়ের চাহিদা এক নয়। সেটাই রিক্রিয়েট করার চেষ্টা করেছি সিনেমায়। যেখানে আজকের যাত্রার ভঙ্গুর বাস্তবতা উঠে এসেছে।’

আসিফ ইসলাম আরও বলেন, ‘যাত্রাপালার শিল্পীরা দিন দিন যেন হারিয়ে যাচ্ছেন। গ্ল্যামার ও বিউটিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। যাত্রাপালায় এখন এটাই বাস্তবতা। এ সিনেমায় যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁরা সত্যিকারের যাত্রাশিল্পী। এমন পরিস্থিতির সঙ্গে তাঁরা পরিচিত। তাই পারফরম্যান্সের জায়গা থেকে তাঁদের জন্য কাজটা সহজ ছিল। কারণ, তাঁরা নিজেদের চরিত্রেই অভিনয় করেছেন।’

নির্মাতা জানান, চলতি বছরের শেষ দিকে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমাটি পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। উৎসব ঘুরে এসে আগামী বছর দেশে মুক্তি পাবে ল্যান্ড অব দ্য প্রিন্সেস।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *