চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সুটিয়া গ্রামের জিয়াউর-তহমিনা দম্পতি জমজ তিন সন্তান নিয়ে অভাবে-কষ্টে দিনযাপন করছেন। প্রতিদিন সন্তানদের জন্য কৌটার দুধ ও ওষুধ এবং নিজেদের খাবার জোগাড় করতে ধার-দেনাসহ এনজিও থেকে ঋণ নিচ্ছেন। মাঝে মধ্যে এক বেলা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের।
জমজ চার সন্তান জন্ম নেওয়ার পর জীবননগর উপজেলা পরিষদ ও বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করেছিল। এছাড়া চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ফল ও পোশাক দিয়েছিলেন। সে সময় সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও পরে আর কেউ জমজ সন্তানের খোঁজখবর রাখেননি।
জামাজ বাঁচ্চাদের মা তহমিনা খাতুন বলেন, ‘বাঁচ্চাদের নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। বাঁচ্চাদের দুধ আর ওষুধ কিনতে প্রতিদিন ১ হাজার করে টাকা লাগছে। নিজের খাবারের কথা ভাবতে পারছি না। সন্তান জন্মের পর কিছু সহযোগিতা পেলেও পরে আর কেউ খোঁজ রাখেনি। এখানো মাতৃত্বকালীন ভাতার টাকাও পাইনি।’
জিয়াউর রহমানের শাশুড়ী আকলিমা জানান, ‘বিয়ের ৮ বছর পর মেয়ের এক সঙ্গে জমজ চার সন্তান হয়। এর মধ্যে একজন মারা যায়। সে সময় হাসপাতালের বিল মেটাতে এনজিও থেকে লোন নিয়ে জামাইকে দিয়েছিলাম। সেই টাকা এখানো শোধ করতে পারিনি।’
প্রতিবেশী মো. রাজু বলেন, ‘জমজ তিন সন্তান নিয়ে অনেক কষ্টে রয়েছে জিয়াউর রহমান ও তহমিনা। তারা অনেক গরিব। দিন আনে দিন খাই। বাঁচ্চাদের দুধ, ওষুধ আর নিজেদের খাবার জোগাড় করতে দিশেহারা তারা।’
এ বিষয়ে বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের প্রধান বলেন, ‘মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য তাদের নাম দেওয়া হয়েছে। দ্রুতই তারা ভাতার টাকা পাবে। সন্তান জন্মের পর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। আরও সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে।’
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হাসিনা মমতাজ জানান, ‘সন্তান জন্মের পর তাৎক্ষণিক আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি তাদের আরও সহযোগিতা করার জন্যে।’
একই কথা বলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘জিয়াউরের সন্তানদের হাসপাতাল থেকে বাড়ি আনা হলে আমি, ইউএনওসহ কয়েকজন দেখতে গিয়েছিলাম। নগদ টাকাসহ কিছু সহযোগিতা করা হয়েছিল তখন। তাদের যেকোনো প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছিল।’
আপনার মতামত লিখুন :