আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট, ব্যহত স্বাস্থ্য সেবা


আজকের চুয়াডাঙ্গা➤তানভীর সোহেল, আলমডাঙ্গা প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১৪, ২০২৩, ১০:৩৬ AM
আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট, ব্যহত স্বাস্থ্য সেবা


চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে ব্যহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। ৬১ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী এ হাসপাতালটিতে বর্তমানে জনবলের তীব্র সংকট রয়েছে। চালকের অভাবে দীর্ঘদিন অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ রয়েছে। এতে রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা দুর্ভোগ পোহান।

২২ টি পদের বিপরীতে এখানে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ১০ জন। তার মধ্যে আবার কনিষ্ঠ বিশেষজ্ঞ (মেডিসিন) মাহবুবুর রহমান ও কনিষ্ঠ বিশেষজ্ঞ (কার্ডিওলজি) নূরে আলম আশরাফী সদর হাসপাতালে এবং চিকিৎসা কর্মকর্তা (হোমিওপ্যাথিক) ইমামুল ইসলাম মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেষণে আছেন। জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তার (ইএমও) তিনটি পদ থাকলেও এখানে সেই পদই নেই।

জানা গেছে, উপজেলার হারদী গ্রামে ১৯৬২ সালে ৩১ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপিত হয়। প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পর ২০১২ সালে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। চাহিদা অনুযায়ী নতুন ভবন নির্মাণ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে এখনো জনবল বাড়ানো হয়নি।

ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের সাহেবপুর গ্রামের বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে তাঁর ভাইকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। কিন্তু হাসপাতালের মেশিন নষ্ট থাকায় বাইরে থেকে এক্স-রে করতে হয়েছে। এছাড়া চিকিৎসক না থাকায় তার ভাইকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এতে তাদের ভোগান্তি ও বাড়তি টাকা গুনতে হয়েছে ।

পৌর শহরের বাসিন্দা মইনুদ্দিন মিয়া বলেন, একটু সমস্যা হলেই মানুষকে দৌঁড়াতে হয় জেলা শহর কিংবা পাশ্ববর্তী জেলা কুষ্টিয়ার বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

৫০ শয্যার জনবল কাঠামো তথ্যানুযায়ী, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও), আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তাসহ (আরএমও) ২২টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে ৯টি পদই শূন্য এবং ৩ জন চিকিৎসক প্রেষণে আছেন। এখানে ইউএইচএফপিও, আরএমও, গাইনি বিশেষজ্ঞ, অবেদনবিদ এবং ছয়জন সহকারী সার্জন কর্মরত রয়েছেন।

আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কনিষ্ঠ বিশেষজ্ঞের ৯টি পদের মধ্যে ৭টিই শূন্য। এগুলো হচ্ছে চক্ষু, শিশু, শিশু (রেভিনিউ পারমানেন্ট), চর্ম ও যৌন, অর্থোপেডিকস, সার্জারি এবং নাক কান গলা (ইএনটি) বিশেষজ্ঞের পদ। দেশের অন্যান্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তার (ইএমও) তিনটি পদ থাকলেও এখানে সেই পদই নেই।

এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কনিষ্ঠ বিশেষজ্ঞ (মেডিসিন) মাহবুবুর রহমান ২০১৬ সালের ৬ অক্টোবর থেকে ও কনিষ্ঠ বিশেষজ্ঞ (কার্ডিওলজি) নূরে আলম আশরাফী ৩০ জুলাই থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এবং চিকিৎসা কর্মকর্তা (হোমিওপ্যাথিক) ইমামুল ইসলাম গত বছরের ২৮ মার্চ থেকে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেষণে আছেন।

বর্তমানে নার্সিং সুপারভাইজারসহ ৩৪ জন জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্সের মধ্যে ২৭ জন কর্মরত আছেন। মিডওয়াইফের ৯টি পদের ৭টিই রয়েছে শূন্য। এখানে এক্স-রেসহ ১৬ ধরনের পরীক্ষার সুযোগ থাকলেও আলট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি পরীক্ষার ব্যবস্থা আজও চালু করা হয়নি। এ কারণে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে উপজেলার বিভিন্ন প্যাথলজি থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে থাকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাদি জিয়াউদ্দীন আহমেদ জানান, জনবল সংকট থাকলেও সমন্বয় করে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসক-কর্মচারীর সংকট চলছে। এবিষয়ে প্রতি মাসেই চিঠি লিখে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।

আজকের চুয়াডাঙ্গা এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আজকের চুয়াডাঙ্গা এর ফেইসবুক পেজ এ , আজকের চুয়াডাঙ্গা এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আজকের চুয়াডাঙ্গা ইউটিউব চ্যানেলে