ঝিনাইদহ জেলা হানাদার মুক্ত দিবস আজ


আজকের চুয়াডাঙ্গা➤ ঝিনাইদহ প্রতিবেদক প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ৬, ২০২৩, ১২:৫০ AM
ঝিনাইদহ জেলা হানাদার মুক্ত দিবস আজ

আজ ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত হয়। আকাশে ওড়ে লাল-সবুজের স্বাধীন পতাকা। চালু হয় ঝিনাইদহে অসামরিক প্রশাসন। স্বাধীনতা যুদ্ধে জেলায় প্রথম সম্মুখযুদ্ধ সংঘটিত হয় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিষয়খালীতে। এছাড়া শৈলকুপা থানা আক্রমণ, কামান্না, আলফাপুর ও আবাইপুরের যুদ্ধ আজও স্মৃতিতে অম্লান।

ঝিনাইদহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার মকবুল হোসেন জানান, ১৯৭১ সালের ১ এপ্রিল যশোর ক্যান্টোনমেন্ট থেকে ভারী অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঝিনাইদহ দখলের উদ্দেশ্যে এগিয়ে আসতে থাকলে বিষয়খালী ব্রিজের এপার থেকে মুক্তিযোদ্ধারা তাদেরকে প্রবাল বাধা দেয়। প্রায় তিন ঘণ্টা যুদ্ধের পর তারা পিছু হঠে। ১৬ এপ্রিল হানাদার বাহিনী আবারও বিষয়খালী বেগবতী নদীর তীরে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল বাধার সম্মুখিন হয়।

এখানে প্রায় ৬ ঘণ্টা তুমুল যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে ৩৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ব্রিজের পাশেই তাদের গণকবর দেওয়া হয়। এ থেকেই জেলায় ছড়িয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধ। বিভিন্ন স্থানে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে। সে সময় উল্লেখযোগ্য যুদ্ধের মধ্যে ছিল বিষয়খালী যুদ্ধ, গাড়াগঞ্জ যুদ্ধ, শৈলকুপা থানা আক্রমণ, কামান্না, আলফাপুর ও আবাইপুরের যুদ্ধ।

ঝিনাইদহে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা গেছে, পহেলা থেকে ১৬ এপ্রিল বিষয়খালী যুদ্ধে ৩৫ জন, ১৪ অক্টোবর আবাইপুর যুদ্ধে ৪১ জন, ২৬ নভেম্বর কামান্না যুদ্ধে ২৭ জনসহ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝিনাইদহ জেলায় ২৭৬ জন মুক্তিযুদ্ধা শহীদ হন। এর মধ্যে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে এই জেলায় দুজন। তাঁরা হলেন- বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ও বীর প্রতীক সিরাজুল ইসলাম।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের অনেককে বিভিন্ন স্থানে গণকবর দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকের নাম ঠিকানা আজও মেলেনি। ৬ ডিসেম্বরের আগে ৩ ডিসেম্বর মহেশপুর, ৪ ডিসেম্বর কোটচাঁদপুর, ৫ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ এবং সর্বশেষ ১১ ডিসেম্বর শৈলকুপা উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।

মুক্তিযুদ্ধকালীন ঝিনাইদহ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর জেলা কমান্ডার আমির হোসেন মালিতার লেখা একটি গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, ৫ ডিসেম্বর মধ্যরাতে মিত্র বাহিনী ঝিনাইদহের হলিধানী বাজারে এসে খবরা খবর নিতে আসেন। তিনি আরও জানান, তারা ৬ ডিসম্বর ভোরে ঝিনাইদহ শহরে প্রবেশ করেন। মিত্র বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কর্নেল বাহেলে ও লে. কর্নেল পিকে দাসগুপ্ত।

৬ ডিসেম্বর সকাল ৭টায় ঝিনাইদহের ইউনিট কমান্ডার হিসেবে তিনিসহ ইউনিয়ন কমান্ডার রজব আলী, বাকুয়া গ্রামের মরহুম মনিরুল ইসলাম, নারিকেল বাড়িয়ার বুলু মিয়া, গাবলা গ্রামের মকছেদ আলীসহ অনেকে মিত্র বাহিনীকে স্বাগত জানিয়ে দ্রুত ঝিনাইদহে বেসামরিক প্রশাসন চালু করার প্রস্তাব দেন।

আমির মালিতা বলেন, তখনও সারা দেশে শামরিক শাসন চলছে। বাংলাদেশের প্রথম ঝিনাইদহ জেলায় বেসামরিক প্রশাসন চালুর ফলে পাকমুক্ত হয় ঝিনাইদহ। এদিকে আজ হানাদারমুক্ত দিবস পালনে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

আজকের চুয়াডাঙ্গা এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আজকের চুয়াডাঙ্গা এর ফেইসবুক পেজ এ , আজকের চুয়াডাঙ্গা এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আজকের চুয়াডাঙ্গা ইউটিউব চ্যানেলে